অভিযান। বাঁকুড়ার কলেজ রোডে। নিজস্ব চিত্র
বেশির ভাগ দোকানেই মুরগি মাংসের দর লেখা নেই। যেখানে রয়েছে, সেই দর দেখে অনেকেই ‘আকাশ ছোঁয়া’ বলে সরে পড়ছেন। বাঁকুড়া শহরের মুরগি মাংসের দোকানগুলিতে পরিদর্শনে গিয়ে এমনই কাণ্ড কারখানা নজরে এল জেলা কৃষি বিপণন ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিকদের।
বুধবার সকালে বাঁকুড়া শহরের কিসানমান্ডি, কলেজমোড় ও নতুনচটি এলাকার কয়েকটি মুরগি মাংসের দোকান পরিদর্শন করেন জেলা কৃষি বিপণন ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিকেরা। বাজার মূল্য যা হওয়া উচিত তার থেকে চড়া দরে মুরগি মাংস বিক্রি করা হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখাই মূলত লক্ষ্য ছিল তাঁদের। যদিও বেশিরভাগ দোকানেই দেখা যায়নি মুরগি মাংসের দাম উল্লেখ করা বোর্ড।
দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এ দিন মুরগি মাংসের বাজার দর ছিল কেজিতে ১২০ টাকা। প্রথমে নতুনচটি এলাকার কিসানমান্ডি থেকে শুরু হয় পরিদর্শন। আধিকারিকেরা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে দেখেন, কেজিতে ১৩০ টাকা দরে মুরগির মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। কলেজরোড এলাকার দোকানগুলিতেও একই ভাবে বেশি দরে মুরগি মাংস বিক্রি করা হচ্ছিল বলে দাবি করেন আধিকারিকেরা। অধিকাংশ জায়গায় দর লেখা বোর্ডও ছিল না। আবার, নতুনচটি এলাকার একটি দোকানে মাংসের দর লেখা বোর্ড থাকলেও দাম লেখা ছিল ১৩০ টাকা।
যে সব ব্যবসায়ীকে বেশি দামে মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়, তাঁদের কড়া ভাবে সতর্ক করে দেন আধিকারিকেরা। সরকার নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দরে মাংস বিক্রি করলে আগামী দিনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। পাশাপাশি মাংসের দোকান পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়েও ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন আধিকারিকেরা। যদিও মাংস বিক্রেতাদের একটা বড় অংশের দাবি, মুরগি মাংসের বাজার দর অনুসারেই তাঁরা বিক্রি করছেন।
কী ভাবে নির্ধারণ করা হয় মুরগি মাংসের বাজার দর? জেলা কৃষি বিপণন দফতরের উপ-অধিকর্তা মহম্মদ আকবর আলি জানান, পোল্ট্রি ফেডারেশনগুলি ফার্মের মুরগির কেজি পিছু দর ঠিক করে। নিয়ম অনুযায়ী পাইকারি বিক্রেতারা সেই দরের উপর কেজিতে ৫-৬ টাকা পর্যন্ত দর বাড়াতে পারেন। কেজি পিছু পাইকারি দরের উপর ৮০-৯০ শতাংশ দর বাড়তি চাপাতে পারেন খোলা বাজারের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু, তার বেশি দাম নেওয়া একেবারেই অনুচিত। তিনি বলেন, “পাইকারি দরের দ্বিগুণ বা আড়াইগুণ দামে খোলা বাজারে মুরগির মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। এটা বেআইনি। আমরা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে বলেছি, সঠিক দরেই বিক্রি করতে হবে।” প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের উপ-অধিকর্তা সোমনাথ মাইতি বলেন, “বেশি দরে মুরগি মাংস বিক্রি করা রুখতে বাজারে আমাদের অভিযান নিয়মিত চলবে।”