রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্যের অন্যত্র সহায়ক মূল্যে আলু কেনা শুরু হলেও পিছিয়েই থাকল বীরভূম। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার জেলার কোথাও-ই শিবির করে চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনা শুরু হয়নি। আর তা নিয়েই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে জেলায়। চাষিদের আশঙ্কা, প্রশাসন যত দেরিতে নামবে, আলু-সঙ্কটের মোকাবিলার ক্ষেত্রে তত সমস্যা বাড়বে।
সাম্প্রতিক আলু-সঙ্কটকে মাথায় রেখে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং স্কুলের মিড-ডে মিলের জন্য আলু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলা কৃষি বিপণন দফতর সূত্রের খবর, চাষিদের কাছ থেকে কুইন্ট্যাল পিছু ৫৫০ টাকা দরে আলু কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আলু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য চাষিদের আরও ৫০ টাকা বেশি দেওয়া হবে। ৫০-১৫০ গ্রাম ওজনের আলুই কেনা হবে। আলু কেনার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে। প্রথম সপ্তাহে এই জেলায় প্রায় ৭ হাজার কুইন্ট্যাল আলু কেনা হবে। কিন্তু, নির্ধারিত অভিযানের প্রথম দিনই জেলায় কোনও আলু কিনতে পারেনি প্রশাসন।
কেন? স্পষ্ট জবাব মেলেনি কৃষি বিপণন দফতরের জেলা আধিকারিক মহম্মদ আকবর আলির কাছ থেকে। তবে, জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী জানান, শুক্রবারই সরকারের নির্দেশিকা পেয়েছে জেলা প্রশাসন। তার পরেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী কোন পঞ্চায়েত সমিতির জন্য কত টাকা লাগবে, তার হিসেবও করা হয়েছে। এই সব করার পর সোমবারই আলু কেনার জন্য সংশ্লিষ্ট জায়গায় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। তাঁর দাবি, আজ, মঙ্গলবার থেকেই শিবির শুরু হবে।
যদিও আলু কেনার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার অনেক দেরিতে সিদ্ধান্ত নিল বলেই মনে করছেন এই জেলার আলু চাষিরা। ময়ূরেশ্বর থানার কুণ্ডলা অঞ্চলের আলু চাষি সন্দীপ ঘোষ বলছেন, “এ বছর দশ বিঘে জমিতে প্রায় ৯০০ প্যাকেট আলু হয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৪০০ প্যাকেটই হিমঘরে রাখতে পেরেছি। বাকি আলু ঘরে রাখার মতো গোলা নেই। যার জন্য মাঠে ১১০-১২০ টাকা দরে আলু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছি।” তাঁর বক্তব্য, “এখন কিনলে চাষির ঘর থেকে আলু পাবে। সরকার হিমঘরে মজুত চাষিদের আলু কিনলে চাষিদের লাভ হবে। তা না হলে আড়তদারেরাই লাভবান হবেন।”