বসন্ত উৎসবের মতো একটা বড় মঞ্চকে হাতছাড়া করা যায় না। প্রচুর মানুষের আনাগোনা বোলপুর-শান্তিনিকেতনে। তাই কাল বিলম্ব না করে সকাল থেকে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছিলেন বোলপুরের ভূমিপুত্র তথা তৃণমূলের বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অনুপম হাজরা। পোস্ট অফিস মোড়ে বন্ধুবান্ধব, সমাজকর্ম বিভাগের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রছাত্রী, দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে এলাকার খাবারের দোকান থেকে শুরু করে চা-এর দোকান, পানের গুমটিগুলি ঘোরেন। কোথাও পনেরো মিনিট, কোথাও আধ ঘণ্টা ছিল তাঁর স্টপেজ। জমাটি দোকানে আবার ঘণ্টা খানেকও থাকতেন অনুপম। খাবারের দোকানে আসা লোকজনকে কখন জল-খাবারের প্লেট বাড়িয়ে দিয়ে, তো কখনও লাল চা হাতে দিয়ে আর্জি করেন, “একটু দেখবেন, মার্জিনটা যেন বাড়ে।” চেনাজানা মানুষদের কাছ থেকে অবশ্য উত্তর আসে, ‘অবশ্যই।’ কিন্তু অচেনাদের? তেমনি এক আগন্তুক আচমকা প্রশ্ন করে বসলেন, “মানে টা তো ভাই বুঝলাম না?” অনুপমবাবুর জবাব, “আমি বোলপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী।” সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যাক্তি জবাব দেন, “আমি তো হুগলির বাসিন্দা।” সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক অনুপমবাবু বলেন, “আশীর্বাদ করুন। তাতেই হবে।” ব্যানার, ফেস্টুন বা দলীয় কোনও প্রচারপত্র ছিল না। বসন্ত উৎসবের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করে রবিবার ভোট প্রচার সারলেন অনুপম। ভোট প্রচারের ‘মিশ্র মঞ্চে’ সাংবাদিকদের দেখেই তিনি বলেন, “আমি কিন্তু কাউকে ঘুষ দিচ্ছি না। নিজে নিজের টাকা দিয়ে খাবার কিনে খাচ্ছেন। আমি মাধ্যম মাত্র। কারণ, এখানকার মানুষ জানেন, আমি সকলকে নিয়ে হইহুল্লোড় করি। একসঙ্গে আড্ডা মারি। জনসংযোগ পুনর্নবিকরণ এবং নিজের আসল উদ্দেশ্যও চরিতার্থ হল।” রসিকতা করে খাবারের এক দোকানী সুবোধবাবু মুচকি হেসে বলে ওঠেন, “এক ঢিলে তিন পাখি শিকার।”