দুবরাজপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় টিভিতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনছেন নতুন গ্রাহকেরা।
ব্যাঙ্কিং পরিষেবা থেকে দূরে থাকা দেশের ৪৪ শতাংশ মানুষকে ব্যাঙ্কের আওতায় নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগী হল কেন্দ্র সরকার। সে জন্য দেশ জুড়ে শুরু হওয়া ‘প্রধানমন্ত্রী জন-ধন যোজনা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সামিল হল বীরভূম জেলাও। উদ্দেশ্য ‘সকলের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা’। বৃহস্পতিবার জেলা জুড়ে ২৪টি ব্যাঙ্কের (রাষ্ট্রায়াত্ব ও বেসরকারি মিলিয়ে) বিভিন্ন শাখায় ৬৩ হাজার ৬৭০ জন এমন মানুষ তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুললেন যাঁদের আগে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না। বীরভূম জেলার লিড ব্যাঙ্ক ইউকো। লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ব্যোমকেশ রায় বলেন, “এ দিনও বহু অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তবে ৬৩ হাজার ৬৭০ সংখ্যাটা মাসের ১৬ তারিখ থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মিলিত সংখ্যা। প্রকল্পের সূচনা লগ্নে জেলার দু’টি জায়গায় ব্যাঙ্কগুলির মিলিত অনুষ্ঠান হয়েছে। একটি হয়েছে জেলা সদর সিউড়িতে, অন্যটি রামপুরহাটে। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন শাখায় অনুষ্ঠান হয়েছে। প্রতি শাখায় অ্যাকাউন্ট খুলতে এসেছেন সেই সব মানুষ যাঁরা এতদিন এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন।” জেলায় থাকা রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্ক এসবিআইয়ের বোলপুর রিজিওন সূত্রের খবর, জেলা জুড়ে থাকা ৩৮টি শাখা এবং ১৮৩টি কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট(সিএসপি) থেকে ১৬-২৭ অগস্ট পর্যন্ত ২৩ হাজার ৫০০টি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। শুধু মাত্র বৃহস্পতিবার অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ১৮৫০টি। তাৎক্ষণিক ভাবে নথিপত্র ছাড়াই ব্যাঙ্ক অ্যকাউন্ট খুলতে পারা, ইন্টারনেট ছাড়াই মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পাওয়ার যে সুযোগ সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এল তাতে প্রভূত সাড়া মিলেছে বলে জানান ব্যাঙ্ক আধিকারিকেরা।
নতুন পাশবই হাতে এক দিনমজুর।
এই প্রকল্পে বিনামূল্যে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য রামপুরহাট রক্তকরবী পুরমঞ্চে এ দিন একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করল রামপুরহাট মহকুমা এলাকার ছটি ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা। দুপুরে ওই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রামপুরহাট মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন রামপুরহাট মহকুমাশাসক-সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা। প্রকল্পের আওতায় যে সমস্ত গ্রাহক বিভিন্ন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন তাঁদেরকে পাশ বই, এটিএম কার্ড-সহ প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে কাগজ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ৭৫ জনকে তাঁদের পাশ বই এবং অন্য সামগ্রী দেওয়া হয়। জেলার অন্য ব্যাঙ্কের শাখার মতো এ দিন দুবরাজপুরে একটি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্কের শাখায় প্রথম অ্যাকাউন্ট খুলতে পারার খুশি চেপে রাখতে পারেননি পদুমা অঞ্চলের বাসিন্দা তথা দিনমজুর তালেব আলি খা, সাহিনা খাতুন বা খ্যাপা বাগদিরা। তাঁদের কথায়, “আমাদের কোনও দিন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হবে ভাবিনি।” লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার জানান, শুধু অ্যাকাউন্ট খোলা নয়। ওঁরা এক লক্ষ টাকার দুর্ঘটনা বিমা এবং পেনশনের সুবিধা পাবেন ধাপে ধাপে।
—নিজস্ব চিত্র