রাত জেগে পুজো

কোজাগরী পূর্ণিমার দিন রাত জেগে ধন দেবীর আরাধনা করলে লক্ষ্মী লাভ হয়। কথিত আছে এমনই। আর এই ধর্ম-বিশ্বাসেই মুরারই থানার গোঁড়সা গ্রামের মানুষ এখনও নিশি জাগেন কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনায়। প্রতি বছর সর্বজনীন উত্‌সবের চেহারা নেয় রাত জাগা ধনদেবীর পুজো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুরারই শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৯
Share:

কোজাগরী পূর্ণিমার দিন রাত জেগে ধন দেবীর আরাধনা করলে লক্ষ্মী লাভ হয়। কথিত আছে এমনই। আর এই ধর্ম-বিশ্বাসেই মুরারই থানার গোঁড়সা গ্রামের মানুষ এখনও নিশি জাগেন কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনায়। প্রতি বছর সর্বজনীন উত্‌সবের চেহারা নেয় রাত জাগা ধনদেবীর পুজো।

Advertisement

গ্রামের দু’ প্রান্তে, পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ায় লক্ষ্মী দেবীর জন্য দুটি পাকা দালানের মন্দির রয়েছে। শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দির দুটিতে কোজাগরি পূর্ণিমা রাতে বিশালাকার লক্ষ্মী দেবী পূজিত হন। দুই পাশে ছায়া ও ছবি নামে আরও দুই মূর্তি থাকেন। পূর্ব পাড়ার লক্ষ্মী দেবীর নামে তিন বিঘে জমি এবং একটি পুকুর আছে। সেই জমির ধান ও পুকুরের মাছ বিক্রির টাকা এবং এলাকার বাসিন্দাদের থেকে চাঁদা তুলে দুই লক্ষী পুজো করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জীব রায় ও সুদেব মুখোপাধ্যায় জানান, গোঁড়শায় দুর্গাপূজার সময় গ্রামে অষ্টধাতুর মূর্তির পূজো করা হত। সম্প্রতি সেই মূর্তি চুরি হয়ে গেলেও প্রাচীন প্রথা মেনে চার দিন ধরে ঘটে পুজা করা হয়।

Advertisement

দুই পাড়ার এই পুজো ঘিরে চলে সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ প্রতিযোগিতাও। সেই প্রতিযোগিতায় সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড স্থান পায়। পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা পঞ্চানন সেন বলেন, “এবারে তাঁদের মণ্ডপে মহিলা কবিয়ালকে দিয়ে কবিগানের আসর বসানো হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিম পাড়ার বসবে বাউল গানের আসর।” পশ্চিম পাড়ায় এবার গ্রামীন মেলাও বসবে। সেখানে মিলিত হয় গ্রামের দুই পাড়ার মানুষ। ঈদ উপলক্ষে গ্রামের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় খেটে খাওয়া মানুষ আগাম গ্রামে এসেছেন, তারাও এই পুজোর আনন্দে মাতবেন।

এখানকার পুজোর একটি পুরনো ঐতিহ্য হল পুজোর পরের দিন, রাত বারোটার পরে কোনও বৈদ্যুতিক আলোর সাহায্য না নিয়ে হ্যাচাকের আলোয় বিসর্জন হয়। মানুষের কাঁধে চড়ে পাঁচ রকম বাজনা সহকারে গোটা গ্রাম ঘুরে দুই পাড়ার ঠাকুর রাত তিনটের সময় স্কুল সংলগ্ন মাঠে নামানো হয়। সেখানে দুই পাড়ার মানুষ এক জায়গায় মিলিত হন। সেখানেই চলে প্রায় দু’ ঘন্টা ধরে বাজি পোড়ানোর প্রতিযোগিতা। রাত শেষে বিসর্জনের পালা শেষ করে দুই পাড়ার মানুষ যখন বাড়ি ফেরেন, চাঁদের আলো মিলিয়ে যায় ভোরের আকাশে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন