শুক্রবার হিড়বাঁধে। —নিজস্ব চিত্র
অবশেষে পুরুলিয়ার শিল্পাঞ্চলে প্রচারে আসছেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শ্রীমতী দেববর্মা ওরফে মুনমুন সেন। রঘুনাথপুরে এই প্রথম পা পড়ছে শাসকদলের এই তারকা প্রার্থীর। তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বীরা ইতিমধ্যেই রঘুনাথপুর বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন অংশ চষে ফেলেছেন। ফলে, কিছুটা পিছিয়ে থেকেই যে রঘুনাথপুরে প্রচার শুরু করছেন মুনমুন, তা আড়ালে মানছেন স্থানীয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও।
তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবার মুনমুন আসছেন সাঁতুড়ি ও নিতুড়িয়ায়। পর দিন প্রচার করবেন রঘুনাথপুর শহর এবং রঘুনাথপুর ১ ব্লকের কিছু গ্রামে। যদিও ঘটনা হল, প্রচারে রঘুনাথপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা ২০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে হাতেগোনা চার-পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকার একাংশ ছুঁয়ে যাচ্ছেন যাবেন তৃণমূল প্রার্থী। আর তাতেই কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
প্রার্থী হওয়ার পরে কথা থাকলেও প্রথম বার নিতুড়িয়ার সড়বড়িতে কর্মিসভায় আসেননি তৃণমূল প্রার্থী। পরে ৪ এপ্রিল নিতুড়িয়ারই গোবাগে শুধু একটি কর্মিসভায় মুনমুন উপস্থিত ছিলেন। তারও তিন সপ্তাহ পরে এ বার পুরোদস্তুর প্রচারে রঘুনাথপুরে আসছেন মুনমুন। রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি জানান, আপাতত স্থির হয়েছে রবিবার বিকেলে সাঁতুড়ির মুরাডিতে কর্মিসভা করে প্রার্থী রাতের দিকে আর একটি কর্মিসভা করবেন নিতুড়িয়ার পারবেলিয়ায়। সোমবার সকালে রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বেড়ো গ্রাম থেকে রোড শো করবেন চোরপাহাড়ি পর্যন্ত। বিকেলে ও সন্ধ্যায় তিনটি কর্মিসভা করবেন রঘুনাথপুর শহর, শাঁকা গ্রামে ও বেনিয়াসোলে।
বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে রঘুনাথপুরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কিছুটা হলেও ভোট কমেছে তৃণমূলের। সেই প্রেক্ষিতে লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় এসে প্রার্থীর এত কম সময়ের প্রচারে ভোটারদের মনে কতটা ছাপ ফেলা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন দলের নেতা-কর্মীদেরই একাংশ। রঘুনাথপুরের তৃণমূলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা সুকুমার রায়ের বক্তব্য, “আমরা চাইছি, তারকা প্রার্থীকে নিয়ে বিধানসভা এলাকায় ছাত্র-যুবদের উদ্যোগে রোড-শো করতে। কিন্তু প্রার্থী সময় দিতে পারবেন না বলে আমাদের জানানো হয়েছে। ফলে কিছুটা হলেও সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা হতাশ হয়েছেন।” সাঁতুডি ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন “নিচুতলার কর্মীরা চাইছেন তারকা প্রার্থীকে নিয়ে যত বেশি সম্ভব এলাকায় ঘুরে বা রোড শো করে প্রচার করতে। কিন্তু, উনি সময় দিতে পারছেন না বলে সাঁতুড়িতে শুধু কর্মিসভাই হচ্ছে।”
দলে প্রশ্ন উঠছে, ভোটের মাত্র দশ দিন আগে এলাকায় ঘুরে কর্মিসভা করে ভোটারদের কাছে কতটা পৌঁছনো সম্ভব। তবে, এই বিষয়গুলিকে আমল দিতে নারাজ বিধায়ক পূর্ণচন্দ্রবাবু। তাঁর কথায়, “আদতে কর্মিসভা বললেও সেগুলি হবে নির্বাচনী সভা, যেখানে সাধারণ ভোটাররা প্রার্থীর ও আমাদের দলের বক্তব্য শুনতে পারবেন।” বিধায়কের সংযোজন, “আমাদের নেতা-কর্মীরা এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রচার করছেন। ফলে প্রার্থীকে এত দিন বিশেষ প্রয়োজন হয়নি। তবে কর্মী-সমর্থকদের একটা দাবি রয়েছে প্রার্থীকে নিয়ে প্রচারের। তাই উনি আমাদের সময় দিয়েছেন।”