বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়ের লিখিত অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
অভিযোগকারী জেলাশাসক। অভিযুক্ত এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী!
মোদী সরকারের বঙ্গজ মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়ের লিখিত অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে নবান্ন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে-র কাছে পাঠানো লিখিত রিপোর্টে জেলাশাসক অলকেশবাবু জানিয়েছেন, কর্তব্যরত অবস্থায় দুর্ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে শারীরিক ভাবেও ‘নিগ্রহ’ করা হয়েছে। ঘটনার দিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভা ছিল পুরুলিয়ায়। সভায় যাওয়ার পথে বাবুলবাবু যানজট এবং কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ পান। জেলাশাসককে নিয়ে ঘটনাস্থলে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। তা-ই নিয়ে অলকেশবাবুর সঙ্গে বচসা শুরু হয় তাঁর। সেই ঘটনার বিবরণই রিপোর্ট আকারে পাঠিয়েছেন জেলাশাসক। সেই রিপোর্টকে গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
প্রশাসনের অন্দরের যুক্তি, কোনও কর্তব্যরত সরকারি আধিকারিকের গায়ে হাত দেওয়া অথবা তাঁর কাজে বাধা দেওয়া আইনের চোখে অপরাধ। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন, এমন কোনও ব্যক্তি এই ধরনের কাজ করলে তা সমাজের সর্বস্তরে ভুল বার্তা পাঠায়। পাশাপাশি, এক জন জেলাশাসক জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদের দায়িত্ব সামলান। প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁর এই নিগ্রহ সার্বিক ভাবে ভুল বার্তা দেয়।
রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘বাবুল সুপ্রিয় প্রভাবশালী বলে তিনি আইন ভাঙতে পারেন না। ওই দিন পুরুলিয়ার জেলাশাসকের সঙ্গে তিনি যা করেছেন, তা আইনের চোখে মান্যতা পায় না। তা ছাড়া সর্বস্তরের আধিকারিকদের সুরক্ষা দেওয়া প্রশাসনের দায়িত্ব। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁর সম্মান যাতে ধাক্কা না-খায়, সেই দিকটা দেখাও প্রশাসনের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।’’
বাবুলবাবু অবশ্য এ-সব নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। কী ঘটেছিল, তা আমজনতাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেছিল। বিজেপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা রয়েছে।’’ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে কলকাতা বিমানবন্দরে বাবুলবাবুর নিরাপত্তার জন্য পাইলট নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তা ‘সবিনয়ে’ প্রত্যাখ্যান করেন। বাবুলবাবু জানান, পুলিশের সঙ্গে তাঁর কোনও বিরোধ নেই। কিন্তু এটা তাঁর আদর্শের বিষয়।