রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজোর পর রাজ্যে আসছেন কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভায় দলের নেতা রাহুল গান্ধী। শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি (এআইসিসি)-র তরফে বার্তা পৌঁছেছে যে, আগামী ১৫ অক্টোবর বাংলায় পৌঁছোবেন তিনি। রাহুলের এই সফরকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এ বারের সফরে কলকাতা শহরে রাহুলের কোনও জনসভা বা কর্মসূচি থাকছে না। বরং উত্তরবঙ্গ ও উত্তর-মধ্য বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকেই মূলত সক্রিয় করতে চাইছেন রাহুল। কংগ্রেস সূত্রে খবর, মালদহ জেলাতেই আয়োজন করা হবে একটি বড় সম্মেলনের। সেখানেই অংশ নেবেন তিনি।
কেন মালদহ? কংগ্রেসের একাংশ বলছে, এর পিছনে রয়েছে কৌশলগত কারণ। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২ আসনের মধ্যে কেবলমাত্র মালদহ দক্ষিণ থেকেই জিতেছিল কংগ্রেস। দলের প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী ওই আসন দখল করতে সক্ষম হন। তাই স্বাভাবিক ভাবেই দলীয় নেতৃত্ব চাইছেন, রাহুলের উপস্থিতি এই জেলায় কংগ্রেস কর্মীদের আরও উজ্জীবিত করুক। বিধান ভবনের দাবি, মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের মধ্যেই কোনও এক জায়গায় এই সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।
তবে এআইসিসি এখনও রাহুলের সম্পূর্ণ সফরসূচি জানায়নি প্রদেশ নেতৃত্বকে। ফলে শেষ মুহূর্তে কর্মসূচিতে কিছু পরিবর্তন আসার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও কংগ্রেস নেতাদের ধারণা, রাহুলের মালদহ সফর নিশ্চিত। সেখানে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও বৃহত্তর রাজনৈতিক বার্তা দেবেন রাহুল।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় এসে রাহুলের বাংলায় আসা প্রসঙ্গে প্রথম ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস এই মুহূর্তে মতাদর্শের লড়াই লড়ছে, আর রাহুল গান্ধী নিজে রাজ্যে এসে সেই লড়াইকে আরও শক্তিশালী করতে চান।’’
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাহুলের এই সফর কেবল সাংগঠনিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে কংগ্রেসের অবস্থান স্পষ্ট করতেও তা কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। তৃণমূল-বিজেপি দ্বিমুখী লড়াইয়ের বাইরে কংগ্রেস কীভাবে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে চায়, তার ইঙ্গিত মিলতে পারে এই সফর থেকেই। মোটের উপর, দুর্গাপুজোর পর রাজ্য সফরে আসা রাহুলকে ঘিরে কংগ্রেস শিবিরে এখন সাজ সাজ রব। মালদহকে সেই সফরের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতেই মরিয়া প্রদেশ নেতৃত্ব।
অন্য দিকে, শনিবার বিধান ভবন থেকে রাহুলের ‘ভোট চোর-গোদি ছোড়’ স্লোগানের সমর্থনে শুরু হয় গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু করল কংগ্রেস। এই গণস্বাক্ষর অভিযান সারা দেশের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও চলবে আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। সেই কর্মসূচির শেষদিন বাংলার কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেন রাহুল।