Indian Railway

৩০-৪০% লোকাল চালাতে ঐকমত্য রাজ্য ও রেল

টিকিট ছাড়া কাউকে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আপাতত ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না হকারদেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৩৮
Share:

রেলকর্মীদের জন্য বিশেষ ট্রেনে উঠতে ভিড় সাধারণ যাত্রীদের। বুধবার বারাসত স্টেশনে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

আলোচনা পর্বের তিন দিনের মধ্যেই লোকাল ট্রেন চালানোর সম্ভাব্য সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে গেল। সোমবারের বৈঠকে রেলকর্তারা বলেছিলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ১০-১৫% ট্রেন দিয়ে পরিষেবা শুরু হতে পারে এবং ক্রমে তা বাড়িয়ে ২৫% করা হবে। বুধবার নবান্নে এক বৈঠকে প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তা ও রেলকর্তারা একমত হন, শুরু থেকেই মূল সময়ে অর্থাৎ সকাল ও সন্ধ্যায় ৩০-৪০% ট্রেন চালাতেই হবে।

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে রাজ্য ও রেল দু’পক্ষই স্বীকার করেছে, ১০-১৫% ট্রেন চালিয়ে ভিড় এড়ানো মুশকিল। তাতে ট্রেনে ওঠার জন্য যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যেতে পারে। তখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি আর হালে পানি পাবে না। সেই জন্য সকাল ও সন্ধ্যায় প্রায় ৪০% ট্রেন চালানোর কথা রাজ্যকে জানায় রেল। রাজ্যও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। প্রাক্-করোনাকালে সাধারণ দিনে শিয়ালদহ শাখায় ৯১৫টি ট্রেন চলত, হাওড়া শাখায় চলত ৪০৭টি। রাজ্যের প্রস্তাব ছিল, দিনের ব্যস্ত সময়ে (সকাল-সন্ধ্যায়) ভিড়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ট্রেন চালানোর কথা ভাবা হোক।

রেলের খবর, পরিস্থিতি অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো বা কমানো হবে।তুলনায় কম ট্রেন চলবে দুপুরের দিকে। কোথায় কেমন ভিড় হচ্ছে, যাত্রীর আনাগোনা কেমন— সে-দিকে নজর রেখে রেল ও রাজ্য যৌথ ভাবে কাজ করবে। বেশ কিছু গ্যালপিং ট্রেন চালানো হবে। সব স্টেশনে দাঁড়ানোর মতো ট্রেন ক’টি চলবে, সেটা নির্ভর করবে যাত্রী-সংখ্যা ও চাহিদার উপরে। সে-ক্ষেত্রে কাছাকাছি বড় ও ছোট স্টেশনের মধ্যে যোগাযোগের জন্য পরিবহণ পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।

Advertisement

আরও পডুন: ‘সেই যে অমিত শাহ এসে খেয়ে গেলেন, তার পর আর কেউ এল না’​

এ দিনের বৈঠকে রেল, প্রশাসন ও যাত্রীদের আদর্শ আচরণবিধি নিয়েও আলোচনা করেন রেল ও রাজ্যের কর্তারা। একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর’ বা ‘এসওপি’ তৈরির বিষয়ে দু’পক্ষ একমত হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তার একটি খসড়া তৈরি করা হতে পারে। তবে চূড়ান্ত ব্যবস্থাপনার আগে যৌথ ভাবে সমীক্ষা চালানো হবে বিভিন্ন স্টেশনে। তার ভিত্তিতে স্টেশনে যাত্রীদের প্রবেশ-প্রস্থানের পথ নির্দিষ্ট করা, যাত্রী-সংখ্যার হিসেব রাখা, বিভিন্ন সতর্কতামূলক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

করোনা-বিধি পালনের মাধ্যমে পরিষেবা সচল করতে গত বৈঠকেই দু’পক্ষ একমত হয়েছিল। ঠিক হয়েছে, ট্রেনে অর্ধেক যাত্রীর বসে যাওয়া, স্টেশনে দূরত্ব-বিধি মেনে চলা, জীবাণুনাশ নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একসঙ্গে বহু মানুষ স্টেশনে ঢোকার চেষ্টা করলে স্বাস্থ্যবিধি কাজ করবে না। সেই জন্যই রেল ও রাজ্য পুলিশের সমন্বয় জরুরি। “রেলের মধ্যে আরপিএফ দায়িত্ব নিতে পারে। কিন্তু স্টেশনে ঢোকার বিষয়টি জিআরপি-কেই দেখভাল করতে হয়। উভয় পক্ষের সমন্বয় থাকলে পুরো পদ্ধতি সহজে মেনে চলা সম্ভব,” বলেন এক পুলিশকর্তা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ট্রেনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।

আরও পডুন: রাজ্যে এক দিনে রেকর্ড সুস্থ, ৯ শতাংশের নীচে সংক্রমণের হার​

টিকিট ছাড়া কাউকে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আপাতত ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না হকারদেরও। তবে পৃথক ভেন্ডার-ট্রেন চালানো হতে পারে।নির্দিষ্ট সময়ে বেশি লোকাল ট্রেন চালালে তবেই যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেতে পারে, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। চিঠিতে তাঁদের বক্তব্য, অল্প যাত্রী নিয়ে স্বল্প সংখ্যক ট্রেন চললে ভিড় ও অব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। বরং হিতে বিপরীতের আশঙ্কাই বেশি। হকার-সহ যাঁদের জীবিকা রেল পরিষেবার উপরে নির্ভরশীল, তাঁদের জন্য সুরাহার ব্যবস্থার দাবিও তুলেছেন দুই বিরোধী নেতা। মান্নান বলেন, ‘‘করোনা ও লকডাউনের জন্য খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ সব চেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন। ট্রেন না-থাকায় বহু মানুষ কাজে বেরোতে পারছেন না। ট্রেন চালানোর আলোচনা শুরু হতেই অনেক দেরি হয়েছে। এখন সাধারণ মানুষের স্বার্থেই সুষ্ঠু ব্যবস্থা চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন