রাজনাথ সিংহ।
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করতে আগামী ৭ ডিসেম্বর কলকাতা যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তার বিষয়টি ছাড়াও, এই সফরে দার্জিলিঙ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক রাজনাথ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর, পাহাড়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক দীর্ঘ সময় ধরে বাকি। কেন্দ্র ও মোর্চা নেতৃত্ব ওই বৈঠক চাইলেও এ যাবৎ রাজ্যের আপত্তিতে তা করা যাচ্ছে না বলে দাবি। সূত্র বলছে, তারই রফাসূত্র খুঁজতে মমতার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে চাইছেন রাজনাথ।
সম্প্রতি কলকাতা থেকে আল কায়দার বাংলাদেশি শাখা সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা দলের দুই জঙ্গি ধরা পড়েছে। জঙ্গি তৎপরতা, নাশকতা আশঙ্কা, অনুপ্রবেশ, রোহিঙ্গা সমস্যা ও জাল টাকার মতো বিষয়গুলি নিয়ে চলতি বৈঠকে কথা হবে।
আরও পড়ুন: ‘বাবরি ২৫’-এ সভা মমতার, পথে বাম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মতে, গত কয়েক মাস ধরেই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার পক্ষে কেন্দ্র। মোর্চা নেতৃত্বও তাই চেয়ে একাধিকবার তদ্বির করেছে। একই সঙ্গে বিমল গুরুঙ্গ যাতে নির্বিঘ্নে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন, তা নিয়েও শরিক দল হিসাবে বিজেপির উপর চাপ রয়েছে মোর্চা নেতৃত্বের। এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্র চাইলেও, গত মাসেই চিঠি দিয়ে রাজ্য জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনও ভাবেই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পক্ষে নয়। যুক্তি হিসাবে রাজ্য জানিয়েছে, জিটিএ-র মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তদারকি কর্তৃপক্ষ হিসাবে কাজ করছে তারা। এই পরিস্থিতিতে দার্জিলিঙ থেকে তৃতীয় পক্ষ হিসাবে বৈঠকে যোগ দেওয়ার কারওর এক্তিয়ার নেই। রাজ্যের এই অনড় অবস্থান পাল্টাতে চাইছেন রাজনাথ।
কেন্দ্রও বুঝতে পারছে যে, পাহাড়ে নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখতে সেই ত্রিপাক্ষিক বৈঠককেই আঁকড়ে ধরতে চাইছেন গুরঙ্গ। অন্য দিকে গুরুঙ্গকে এক ইঞ্চি বাড়তি জমি দিতে রাজি নন মমতা। পরিস্থিতি জটিল হলেও, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, রাজনাথ সিংহ মমতার সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চান। মমতাকে রাজি হলে তবেই শেষ পর্যন্ত ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকবে কেন্দ্র। কারণ মমতাকে এড়িয়ে দার্জিলিঙ সমস্যা যে সমাধান হবে না তা বিলক্ষণ জানেন রাজনাথও। রাজনাথ ঘনিষ্ঠদের মতে, বিরোধী শিবিরে থাকলেও দুই নেতার ব্যক্তিগত সম্পর্ক বেশ ভাল। ফলে সমাধান সূত্র বেরোতে পারে এমনটাই আশা করছেন স্বরাষ্ট্রকর্তারা।