Recruitment Scam

টাকার খেলা কতটা গভীর? আতশকাচে টলিউড, শিক্ষা এবং পুরকর্তাদের সঙ্গে অয়নের অর্থ-যোগ

ইডি সূত্রের দাবি, ছবি প্রযোজনার সূত্রে অয়ন এবং তাঁর সংস্থা এবিএস ইনফ্রোজ়ন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্তত ৬৮ জনকে কয়েক কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল‌।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ০৮:৪০
Share:

অয়ন শীল। ফাইল চিত্র।

টালিগঞ্জের সিনেমাপাড়ায় শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির টাকার খেলা কত ব্যাপক এবং কত গভীর, কুন্তল ঘোষের পরে একই মামলায় ধৃত অয়ন শীলের সূত্রে তা অধিকতর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রের দাবি। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কুন্তলের সূত্রে নাম জড়িয়েছিল অভিনেতা বনি সেনগুপ্তের। বনি অবশ্য কুন্তলের টাকা ইডি-কে ফেরত দিয়েছেন। অভিযোগ, অয়নও নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ঢেলেছেন চলচ্চিত্র প্রযোজনায়। পরিচিত অভিনেতাদের সঙ্গে সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অয়নের ‘ঘনিষ্ঠ’ শ্বেতা চক্রবর্তীও।

Advertisement

ইডি সূত্রের দাবি, ছবি প্রযোজনার সূত্রে অয়ন এবং তাঁর সংস্থা এবিএস ইনফ্রোজ়ন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্তত ৬৮ জনকে কয়েক কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল‌। নগদেও লেনদেন হয়েছে। শুটিংয়ের জন্য টালিগঞ্জের বিভিন্ন সংগঠনের আধিকারিকদের চিঠির প্রতিলিপি পাওয়া গিয়েছে। অয়নের প্রযোজিত একটি ছবি পরিচালনা করেন এক নামী পরিচালক। এ দিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

অয়নের বাড়িতে চাকরির পরীক্ষার উত্তরপত্র পেয়েছে ইডি। তার মধ্যে ২০১২, ২০১৪-র প্রাথমিক টেটের উত্তরপত্রের প্রতিলিপি রয়েছে বলেও ইডি সূত্রের দাবি। অয়নের বাড়ি থেকে বিভিন্ন পুরসভার কর্তা, শিক্ষাকর্তাদের চিঠির প্রতিলিপি পাওয়া গিয়েছে। সেগুলিতে নিয়োগের বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ আছে। সেগুলির যাচাই চলছে।

Advertisement

ইডি সূত্রের দাবি, ২০১৬ সালের পর থেকে নিজের এজেন্ট মারফত বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি চালিয়ে গিয়েছেন অয়ন। পুরসভার জঞ্জাল বিভাগ ও পুর অফিসের বিভিন্ন পদে চাকরি বিক্রি হয়েছিল। পদের হেরফেরে অয়ন পাঁচ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ। তাঁর ১২ জন এজেন্টের হদিস পেয়েছে ইডি। নিয়োগের সুপারিশ পাঠাতেন অয়ন। চিঠির প্রতিলিপি মিলেছে।

তদন্তকারীদের দাবি, অয়নের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হদিস মিলেছে। তার মধ্যে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি কামারহাটি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার শ্বেতা চক্রবর্তীর নামও আছে। শ্বেতার নামে কেনা বিদেশি গাড়ির রসিদও মিলেছে। অয়নের অফিসে তাঁর বাবা, মা, স্ত্রী ও ছেলের নামে কয়েক কোটি টাকার জমির নথি পাওয়া গিয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বেশ কিছু জমির দলিল উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, ঘনিষ্ঠদের নামে জমি কিনেছেন অয়ন। অয়নের বাড়িতে থাকা দু’টি গাড়ির মধ্যে একটি আছে তাঁর নিজের সংস্থার নামে ও অন্যটি তাঁর স্ত্রীর নামে। অয়নের মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও মহিলার সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন