(বাঁ দিকে) বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
অসমের সভামঞ্চ থেকে অনুপ্রবেশ এবং জনবিন্যাস বদলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গে এসে সেই একই বিষয়ে বিশদে খোঁজখবর নিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে সেই আলোচনার জন্য ডেকে পাঠালেন বিজয় দুর্গে (সাবেক ফোর্ট উইলিয়াম)। বিজেপি সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের যে জেলাগুলি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী, সেগুলির বিষয়েই মূলত খোঁজ নিয়েছেন রাজনাথ।
রবিবার বিকালেই কলকাতায় পৌঁছেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ। দেশের সর্বোচ্চ সামরিক কর্তাদের যে সম্মেলনের উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী মোদী কলকাতায় এসেছিলেন, সেই সম্মেলনে যোগ দিতেই রাজনাথের কলকাতা সফর। বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি বিজয় দুর্গে চলে যান। সেখানেই রাতে ছিলেন তিনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীককে সেখানেই ডেকে পাঠান। দু’জনের আধ ঘণ্টা একান্ত বৈঠক হয়।
পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির পরিস্থিতি কেমন, সেখানকার জনবিন্যাস কতটা বদলেছে, সে সব শমীকের কাছ থেকে রাজনাথ বিশদে জানতে চান। অনুপ্রবেশ সমস্যা এই মুহূর্তে কতটা গভীর, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজরদারি এড়াতে দুষ্কৃতীরা কী ধরনের কৌশল নিচ্ছে, সে সব বিষয়েও কথা হয়েছে। রাজনাথের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা অস্বীকার না করলেও কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে শমীক বিশদে কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘রাজনাথজি এক সময়ে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক ছিলেন। তখন থেকেই এই রাজ্যকে তিনি ভাল ভাবে চেনেন। সীমান্তের পরিস্থিতিও তখন থেকেই জানেন। বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর কিছু কথা জানার ছিল। যা জানানোর দরকার জানিয়েছি।’’
অনুপ্রবেশের সমস্যা নিয়ে রাজনাথ-শমীকের বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পশ্চিমবঙ্গে আসার আগে অসমের সভায় মোদী রবিবার বলেছিলেন, ‘‘অনুপ্রবেশকারীরা সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে জনবিন্যাস বদলে দিয়েছে। যা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে ঝুঁকির। আমরা অনুপ্রবেশকারীদের সেই ছক ভেস্তে দিতেই ‘জনবিন্যাস কমিশন’ তৈরি করেছি। যারা অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করার চেষ্টা করবে, তাদের ফল পেতে হবে।’’ মোদীর কথায়, ‘‘বিজেপির সরকার আমাদের জমিতে অনুপ্রবেশকারীদের কিছুতেই থাকতে দেবে না।’’ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরে অনুপ্রবেশ এবং জনবিন্যাস বদলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের অবস্থান নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সেই আবহেই রাজনাথ-শমীক বৈঠক। প্রসঙ্গত, শমীক একদা বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার (বসিরহাট দক্ষিণ) বিধায়কও ছিলেন। সেই কারণেই তাঁর অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ।