নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল। মামলাকারী শমিতাভ ধরের আইনজীবী সি কে রাই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। নতুন আইনজীবীর তরফে আজ প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের বেঞ্চে আবেদন জানানো হয়, তাঁরা সবে মামলার নথিপত্র হাতে পেয়েছেন। তা খতিয়ে দেখার জন্য আরও সময় প্রয়োজন। আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানি হতে পারে।
কে এই শমিতাভ ধর? কেন তিনি সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ চাইছেন? আইনজীবী মহল ও রাজনৈতিক শিবিরের গুঞ্জন, তৃণমূল নেতারাই এর পিছনে রয়েছেন। কারণ, গত সপ্তাহেই তৃণমূল নেতারা আইনি মোকাবিলার কথা আলোচনা করেন। আজ তৃণমূল নেতা মুকুল রায় অবশ্য বলেন, ‘‘আমি মামলাকারীকে চিনি না। কেন মামলা করেছে, তা-ও জানা নেই।’’ আজ শুনানির দিন নির্ধারিত হলেও মুকুল রায় দিল্লিতে ছিলেন না।
এই জনস্বার্থ মামলায় সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে অস্ত্র করা হয়েছে সংবিধানের ১০৫-তম অনুচ্ছেদকে। যাতে সংসদ, সাংসদ ও সংসদীয় কমিটির ক্ষমতা ও স্বাধিকারের কথা রয়েছে। আবেদনে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই এফআইআর করেছে, তাঁরা রাজ্যসভা বা লোকসভার সাংসদ। রাজ্যসভা, লোকসভা ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ‘এথিক্স কমিটি’-র তদন্ত শেষ হয়নি। তার আগেই সিবিআই তদন্ত শুরু করতে পারে না। বাস্তব হল, অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদদের বিরুদ্ধে লোকসভার এথিক্স কমিটি কাজ শুরু করলেও তা বেশিদূর এগোয়নি। শুধু সাংসদদের নোটিস জারি হয়েছিল। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদদের মধ্যে একমাত্র অভিযুক্ত মুকুল রায়। কিন্তু রাজ্যসভার এথিক্স কমিটি এ বিষয়ে মাথাই ঘামায়নি। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, মহম্মদ সেলিমরা যা নিয়ে সংসদে সরব হয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্ট নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে দিয়ে তদন্তেরই নির্দেশ দেয়।