স্কুলশিক্ষকদের অবসর ষাটেই, জানালেন পার্থ

হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে প্রাথমিক স্তরে প্রায় ৪২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। তার পরের স্তরেও নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ খানিকটা এগিয়েছে। ফলে স্কুল শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা এমনিতেই ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৫
Share:

হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে প্রাথমিক স্তরে প্রায় ৪২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। তার পরের স্তরেও নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ খানিকটা এগিয়েছে। ফলে স্কুল শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা এমনিতেই ছিল না। বৃহস্পতিবার সেই কথাটাই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

এ দিন বেহালায় স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের পরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘স্কুল শিক্ষকদের অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের ভাবনাতেই নেই। ফি বছর স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে। আরও প্রায় পৌনে এক লক্ষ শিক্ষক নিয়োগ হতে চলেছে প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে। এই অবস্থায় স্কুল শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর প্রশ্নই ওঠে না।’’ তাঁর কথায়, স্কুল শিক্ষকদের অবসরের বয়স বাড়ালে নতুন ছেলেমেয়েদের সরকার সুযোগ দেবে কী ভাবে?

গত শনিবারই শিক্ষকদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬২ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতেই স্কুল শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল যে, তাঁদেরও চাকরির মেয়াদ বুঝি বাড়াবে সরকার।

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘স্কুলগুলি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তথা ইউজিসি-র নিয়মের আওতায় পড়ে না। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর করার জন্য ইউজিসি সুপারিশ করেছিল। তার ভিত্তিতেই রাজ্য সরকার তাঁদের চাকরির মেয়াদ ২ বছর বাড়িয়েছে।’’ পার্থবাবু এ-ও বলেন, ‘‘সরকারের নজর এড়িয়ে পিছনের দরজা দিয়েছে অনেকেই পঁয়ষট্টি পেরিয়ে সত্তর বছর পর্যন্ত চাকরি করেছেন। সেই যথেচ্ছাচার আটকাতে চাইছি।’’

প্রসঙ্গত, বর্তমানে রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে প্রায় ৭৩ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকেই খালি পদ রয়েছে ৪২ হাজার। তা পূরণের জন্য ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তবে উচ্চ প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হলেও বিভিন্ন আইনি জটিলতায় প্রক্রিয়া কিছুটা থমকে রয়েছে। শিক্ষা মহলের আশঙ্কা, তার দ্রুত নিষ্পত্তি না হলে শিক্ষা ক্ষেত্রে সঙ্কটের আশঙ্কা রয়েছে।

তবে পার্থবাবুর বক্তব্যকে এ দিন স্বাগত জানান বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। কারণ তাঁরাও মনে করেন, স্কুল শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ালে নতুন প্রজন্ম বঞ্চিত হবে। নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘নতুন প্রজন্মের স্বার্থে আমরা এই বিষয়ে আন্দোলন করব না। তবে পেশাগত স্বার্থে এবং শিক্ষায় গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে আন্দোলন জারি থাকবে।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্যে বেকারের সংখ্যা মাত্রাছাড়া। পুরনোদের মেয়াদ বাড়ানোর থেকে নতুনদের সুযোগ দেওয়া বেশি জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন