Shahjahan Sheikh

ইডি হেফাজতে ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে! কুন্তল, শঙ্করের পর এ বার কোর্টে দাবি শাহজাহানের

আদালতে শাহজাহানের আইনজীবীর আবেদনের বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী। ওই কাগজে আদৌ শাহজাহানের লেখা রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৭
Share:

(বাঁ দিক থেকে) কুন্তল ঘোষ, শঙ্কর আঢ্য এবং শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র ।

ইডি হেফাজতে ‘জোর করে’ বয়ান লেখানো হয়েছে তাঁকে! এই মর্মেই অভিযোগ তুলে আদালতে আবেদন জানালেন সন্দেশখালিকাণ্ডে ধৃত শাহজাহান শেখ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে শাহজাহান যে বয়ান দিয়েছেন, তা-ও তিনি প্রত্যাহার করতে চাইছেন বলে শাহজাহানের আইনজীবী জাকির হুসেন শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত বলাগড়ের যুবনেতা কুন্তল ঘোষ এবং রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত শঙ্কর আঢ্যও একই অভিযোগ তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে।

Advertisement

শনিবার সন্দেশখালি মামলার শুনানি ছিল ব্যাঙ্কশাল আদালতে। শুনানি চলাকালীন ব্যাঙ্কশাল আদালতে শাহজাহানের বিচার বিভাগীয় হেফাজত চেয়ে আবেদন জানান ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী। তাঁর দাবি ছিল, এই মামলায় কারা সাক্ষী দিয়েছেন, তা শাহজাহান জানেন। তাই এখন যদি শাহজাহানকে মুক্তি দেওয়া হয়, তা হলে মামলায় অসুবিধা হতে পারে। শাহজাহানের আয়-বহির্ভূত অনেক সম্পত্তি রয়েছে বলেও আদালতে জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। সেই সময়েই আদালতে একটি হাতে লেখা কাগজ তুলে ধরেন শাহজাহানের আইনজীবী জাকির। তিনি আদালতে জানান, ওই কাগজে শাহজাহানের বয়ান রয়েছে এবং তিনি তা আদালতে জানাতে চান।

শাহজাহানের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ইডি হেফাজতে শাহজাহানকে ভয় দেখিয়ে জোর করে বয়ান লেখানো হয়েছিল। হুমকি দেওয়া হয়েছিল, ওই বয়ান না দিলে তাঁকে, তাঁর পরিবারকে মাদক এবং মহিলা পাচার মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে। এর পরেই শাহজাহান বয়ান দেন। তবে এখন শাহজাহান ইডিকে দেওয়া তাঁর বয়ান প্রত্যাহার করতে চান বলেও আদালতে আবেদন (রিট্র্যাক্টশন পিটিশন) জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী জাকির।

Advertisement

যদিও শাহজাহানের আইনজীবীর ওই কাগুজে আবেদনের বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবী অরিজিৎ। ওই কাগজে আদৌ শাহজাহানের লেখা রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই কাগজ চিঠি না আবেদন, তা নিয়েও সওয়াল করেন ইডির আইনজীবী। আবেদনের পদ্ধতি এবং বক্তব্যেরও বিরোধিতা করেন। এর পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসারের আধিকারিককে শাহজাহানের কাছে গিয়ে কথা বলতেও দেখা যায়। যার পরে মাথা নাড়তে দেখা যায় শাহাজাহানকে। পরে শাহজাহান ওই কাগজে সই করে দেন। আগামী ১৫ এপ্রিল বিষয়টি ইডির বিশেষ আদালতে উঠবে।

শুনানি শেষে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ বলেন, ‘‘শাহজাহানের পক্ষ থেকে ওঁর আইনজীবী আদালতে রিট্র্যাক্টশন পিটিশন দিয়েছেন। আমাদেরও লিখিত আকারে বিরোধিতা করার সুযোগ দিয়েছে আদালত। আগামী শুনানিতে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। শাহজাহান অভিযোগ করেছেন, ওঁর কাছ থেকে জোর করে বয়ান নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি বিচারাধীন। আদালত সত্যতা বিচার করবে।’’

অন্য দিকে, শাহজাহানের আইনজীবী বলেন, ‘‘এটা কোনও চিঠি নয়, রিট্র্যাক্টশন পিটিশন। খুব সহজ কথা, আদালতে শাহজাহান আবেদন করে জানিয়েছেন যে, উনি নিজের ইচ্ছায় বয়ান দেননি। আর সেই কারণেই তিনি তাঁর বয়ান প্রত্যাহার করতে চেয়েছেন।’’ আদালত থেকে বার করার সময় জোরপূর্বক বয়ান লেখানোর বিষয়ে শাহজাহানকে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি কোনও উত্তর দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন