TMC MP Mahua Moitra

মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে চিঠি তাঁর এলাকার বিধায়কদের, ছ’জন অভিযোগপত্র দিলেন দলনেত্রী মমতাকে

কৃষ্ণনগর লোকসভার অধীন পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের পাঁচ তৃণমূল বিধায়ক এবং মহুয়ারই পুরনো বিধানসভা কেন্দ্র করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক স্বাক্ষর করেছেন ওই অভিযোগপত্রে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:০০
Share:

(বাঁ দিকে) মহুয়া মৈত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়ে তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন তৃণমূলের ছ’জন বিধায়ক। কৃষ্ণনগর লোকসভার অধীন পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের পাঁচ তৃণমূল বিধায়ক এবং মহুয়ারই পুরনো বিধানসভা কেন্দ্র করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক স্বাক্ষর করেছেন ওই অভিযোগপত্রে।

Advertisement

অভিযোগপত্রে যাঁরা সই করেছেন, তাঁরা হলেন করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়, চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ, পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য (যিনি সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন), কৃষ্ণনগর দক্ষিণের বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং কালীগঞ্জের বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ (লাল)।

মহুয়ার বিরুদ্ধে লেখা ওই চিঠিতে সই নেই তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা এবং কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়ের। যিনি অসুস্থ অবস্থায় গৃহবন্দি। অর্থাৎ, মহুয়ার লোকসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগরের পাঁচ জন বিধায়কই তাঁর বিরুদ্ধে দলনেত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের সঙ্গেই অভিযোগ করেছেন করিমপুরের বিধায়ক। যে বিধানসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগর লোকসভা নয়, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। যদিও এলাকাটি তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত।

Advertisement

সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চালু থাকায় মহুয়া আপাতত দিল্লিতে। তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত তাঁকে পাওয়া যায়নি। মহুয়ার বক্তব্য পেলে তা এখানে উল্লেখ করা হবে। তবে পাশাপাশিই এই বিষয়েও নজর থাকবে যে, অভিযোগ পাওয়ার পরে মমতা মহুয়ার সঙ্গে কথা বলেন কি না বা মহুয়া নিজে এই বিষয়ে কিছু বলেন কি না। এটাও দেখার যে, তেহট্টের বিধায়ক তাপস (যাঁর সই নেই চিঠিতে) মহুয়ার সমর্থনে মুখ খোলেন কি না।

সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ছয় বিধায়কের অভিযোগ, তিনি বিধায়কদের ‘এড়িয়ে’ তিন ব্লক সভাপতি-সহ ১১৬ জন বুথ সভাপতি এবং ১৬টি অঞ্চল সভাপতি বদল করেছেন। দ্বিতীয়ত, মহুয়া ওই বিধায়কদের ‘এড়িয়ে’ গিয়ে তাঁদের এলাকায় যাতায়াত করেন। বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠীদের ‘হাওয়া’ দিয়ে নদিয়া জেলার রাজনীতিতে মহুয়া ‘অস্থিরতা’ তৈরি করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ওই বিধায়কেরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, সংখ্যালঘু এলাকায় কুখ‍্যাত ‘তোলাবাজ ও সমাজবিরোধীদের’ নিয়ে চলাফেরা করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন তিনি। বর্তমান বিধায়কদের সরিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী করবেন বলে একাধিক ব্লকের নেতাদের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, জেলায় বিজেপির বিরোধী কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায় না। উল্টে দলেরই বিধায়কদের বিরুদ্ধে যে কোনও ধরনের পদক্ষেপ করতে ‘সক্রিয় ইন্ধন’ জোগাচ্ছেন তিনি।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেই অভিযোগ উঠেছিল, চাপড়া বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জেবের শেখকে ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন মহুয়া। যদিও সেখানে জেতেন রুকবানুর। তাঁদের আশঙ্কা, আগামী বিধানসভা ভোটেও ফের তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাতে নির্বাচনী পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেই অভিমত মহুয়ার বিরোধী এক তৃণমূল বিধায়কের।

মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি অভিযোগপত্রটি দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের রাজ‍্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকেও। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধানসভা অধিবেশন শুরু পরেই মহুয়ার বিরুদ্ধে মৌখিক ভাবে ওই সমস্ত অভিযোগ করা হয়েছিল দলীয় নেতৃত্বের কাছে। তখনই ওই ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের বলা হয়েছিল, দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাতে। সেই মতোই বৃহস্পতিবার ওই অভিযোগগুলি লিখিত আকারে জমা দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement