গবেষণাগার ঘুরে দেখছেন স্মৃতি ইরানি।
কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী হওয়ার পরে প্রথম বার খড়্গপুর আইআইটি পরিদর্শন করলেন স্মৃতি ইরানি। বুধবার আইআইটি-র ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী, ডেপুটি ডিরেক্টর শৌভিক ভট্টাচার্য, রেজিস্ট্রার প্রদীপ পাইন ও বিভিন্ন বিভাগের পাঁচ জন ডিন-এর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের বেশ কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। খড়্গপুর থেকে মেদিনীপুরে গিয়ে মোদী সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সভাতেও যোগ দেন তিনি। আইআইটি-র ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, “মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে চলা বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে মন্ত্রী খোঁজখবর নিয়েছেন। কয়েকটি প্রকল্পের কাজ মন্ত্রী পরিদর্শনও করেন।’’
এ দিন বেলা ১টা নাগাদ খড়্গপুরে পৌঁছন স্মৃতি ইরানি। আইআইটি-র অতিথিনিবাসে মন্ত্রীকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী। এরপরই বৈঠকে যোগ দেন তিনি। আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে খড়্গপুর আইআইটি-তে চলা বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আইআইটি-র ‘টক টু টেন থাউজ্যান্ড টিচার’ প্রকল্প সম্পর্কেও তাঁকে বিস্তারিত জানানো হয়। এই প্রকল্পে পর্যায়ক্রমে দেশের ২২১টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রায় ৭ হাজার শিক্ষককে প্রযুক্তির নানা দিক সম্পর্কে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে শিক্ষিকাদের যোগদান তুলনামূলক ভাবে কম। দূর-দূরান্তের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক মহিলার পক্ষে খড়্গপুরে এসে প্রশিক্ষণ নিতে অসুবিধা হয়। তাই বিভিন্ন জায়গায় এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেই বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
মেদিমেদিনীপুরে স্মৃতি ইরানি।
আইআইটি-র ‘সায়েন্টিফিক অ্যাপ্রোচ টু নেটওয়ার্কিং আন্ড ডিজাইনিং অফ হেরিটেজ ইন্টারফেস’ (সন্ধি)- প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। ‘সন্ধি’ প্রকল্পে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থানের শিল্প ভাবনা, সংরক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে গবেষণার কাজ হয়। এই প্রকল্পকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ‘যুক্তি’-এর সঙ্গে সংযুক্তির কথাও বলেন মন্ত্রী। একইসঙ্গে, স্কুল পড়ুয়াদের কাছেও আধুনিক প্রযুক্তির সুফল পৌঁছে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। ‘সন্ধি’ প্রকল্পের প্রধান শিক্ষক জয় সেন বলেন, “মন্ত্রী ‘যুক্তি’র সঙ্গে ‘সন্ধি’-র সংযুক্তিকরণের কথা জানিয়েছেন। স্কুল পড়ুয়াদেরও এই প্রকল্প সম্পর্কে জানানোর কথা বলেছেন তিনি।’’
বৈঠক শেষে আইআইটি-র পুরনো ভবন সংলগ্ন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ‘মেমব্রেন সেপারেশন’ গবেষণাগার পরিদর্শন করেন স্মৃতি ইরানি। এই গবেষণাগারেই মানবদেহের কিডনি-র ডায়ালিসিস-এর ‘কার্টিজ’ বানানোর যন্ত্র তৈরির কাজ চলছে। ডায়ালিসিসের জন্য বিদেশ থেকে কার্টিজ আনতে অনেক খরচ হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশেই এই কার্টিজ বানানোর যন্ত্র তৈরির চেষ্টা চলছে। ফলে খরচ আগের থেকে অনেকটাই কমানো যাবে। আইআইটি-র ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, “কিডনি ডায়ালিসিসের কার্টিজের দাম অনেক। ডায়ালিসিসের যন্ত্রগুলিও যথেষ্ট দামি। এখানে সেই যন্ত্র তৈরি হলে দাম অনেক কম পড়বে। এই প্রকল্পের কাজ মন্ত্রীকে দেখানো হয়।’’ তিনি জানান, আইআইটি-তে থাকা বিভিন্ন উন্নত মানের যন্ত্র দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কী ভাবে অন-লাইনে ব্যবহার করতে পারে, মন্ত্রীকে সে বিষয়েও জানানো হয়েছে। এ দিন আইআইটি-তে যান বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য, দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, শহর সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝা, নেতা রীতেশ তিওয়ারি প্রমুখ।
ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।