বন‌্ধ খুলে দিন, আর্জি মুখ্যমন্ত্রীকে

লাউঞ্জ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে বের হতে দেখে, ‘দিদি’ ‘দিদি’ বলে চিৎকার করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীও হাসি মুখে এগিয়ে এসেছেন। বিভিন্ন বোর্ডের প্রতিনিধিদের বলেছেন, ‘‘আগামীকালের মিটিঙে আসুন। সবাই ভাল থাকবেন।’’

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৬
Share:

হাসিমুখে: বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার রাস্তার একপাশে গার্ডরেল-দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করা ছিল পুলিশের। মুখ্যমন্ত্রী বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামলেই পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা স্বাগত জানাতে উপস্থিত থাকেন।

Advertisement

সোমবার বিমানবন্দরে ব্যারিকেডের ভিতর এবারে জায়গা বেশি ছিল না। অনেকের দাবি, পুলিশের একাংশ মনে করেছিলেন বনধ চলায় পাহাড় থেকে বেশি লোক আসবে না। মুখ্যমন্ত্রীর বিমান রানওয়েতে নামে বিকেল তিনটে নাগাদ, তার প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে থেকে ব্যারিকেডের ভিতরে ভিড় উপচে পড়ল। জায়গা না ধরায় বিমানবন্দরের গেটের বাইরে থাকতে হল অনেককে। বন্‌ধ উপেক্ষা করে গাড়ি করে কার্শিয়াং, মিরিক, লেবং থেকে এসেছিলেন কয়েক’শ বাসিন্দা।

লাউঞ্জ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে বের হতে দেখে, ‘দিদি’ ‘দিদি’ বলে চিৎকার করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীও হাসি মুখে এগিয়ে এসেছেন। বিভিন্ন বোর্ডের প্রতিনিধিদের বলেছেন, ‘‘আগামীকালের মিটিঙে আসুন। সবাই ভাল থাকবেন।’’ আজ মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বোর্ডের প্রতিনিধিরাও থাকছেন। সোনু তামাঙ্গ এসেছিলেন কার্শিয়াং থেকে। তামাঙ্গ সম্প্রদায়ের রীতি মেনে শাড়ি পড়ে, সাজগোজ করেছিলেন। সোনু বলেন, ‘‘আজ অনেকদিন পরে সাজগোজ করছি। এতদিন দমবন্ধ করা পরিস্থিতি চলছে। আর এমন পরিবেশে থাকতে পারছি না।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে ‘দিদি’ বলে চিৎকার করেছিলেন সাবিত্রী লিম্বু। মুখ্যমন্ত্রী ভিড়ের দিকে এগিয়ে আসতে সাবিত্রী লিম্বু আরও জোরে চিৎকার করে বললেন, ‘‘বন্‌ধ খুলে দিন।’’ ধামসা, মাদলের শব্দে সে আওয়াজ চাপা পড়ে গেল। যদিও, প্রধান বোর্ডেরপ সদস্য সাগর লাম বলেন, ‘‘আমাদের অনেকে লেবং, মিরিক থেকে এসেছে। কোথাও কোনও সমস্যা হয় না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ডিএ ঘোষণায় শব্দ প্রয়োগের নিন্দায় কোর্ট

অভ্যর্থনা: মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আসা পাহাড়ের নানা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। সোমবার বাগডোগরায়। নিজস্ব চিত্র

তিন মাসের কাছাকাছি সময় ধরে টানা বনধে পাহাড়বাসী বিরক্ত বলে প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন বিমন তামাঙ্গ। সেবক থেকে কার্শিয়াং, সুকনা থেকে মিরিক সন্ধ্যের পরে ইতিউতি দোকান খুলছিল। বিনয়ের প্রকাশ্য সভার পরে দোকান-বাজার খোলার প্রবণতা বেড়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী আসার দিনই কালিম্পং থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ফের বাস চলাচল শুরু হয়েছে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কালিম্পং শাখাও খুলেছে এ দিন স্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। পাহাড়ের তৃণমূল অথবা জাপ-জিএনএলএফ নেতারা দাবি করেছিলেন, বাসিন্দাদের চাপেই বনধ উঠে যাবে। জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নীরজ জিম্বার কথায়, ‘‘আমরা আগেও বলেছি। পাহাড়ের মানুষই আন্দোলনের ভবিতব্য ঠিক করবে।’’

সোমবার বিমানবন্দরের ভিড় সেই ভবিতব্যের ইঙ্গিত বলে মনে করেছেন গুরুঙ্গ বিরোধী নেতাদের অনেকেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement