Bengal SSC Recruitment Verdict

নতুন নিয়োগের নোটিসের খসড়া তৈরি করে ফেলল শিক্ষা দফতর, সুপ্রিম-নির্দেশে ৩১ মে-র আগেই বিজ্ঞপ্তি

শিক্ষা দফতরের সূত্র জানিয়েছে, নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর খসড়া বিজ্ঞপ্তি প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। আপাতত নবান্নের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তবে এখনও শূন্য পদের তালিকা শিক্ষা দফতরের হাতে পৌঁছোয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ১৫:৪৫
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছিল আগামী ৩১ মে-র মধ্যে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে রাজ্যকে। সেইমতো নির্ধারিত সময়ের আগেই খসড়া তৈরি করে ফেলল শিক্ষা দফতর। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ওই খসড়া ইতিমধ্যেই অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। নবান্নের সবুজ সঙ্কেত পেলেই প্রকাশ করা হবে বিজ্ঞপ্তি।

Advertisement

শিক্ষা দফতরের সূত্র জানিয়েছে, নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর খসড়া বিজ্ঞপ্তি প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। আপাতত নবান্নের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তবে এখনও শূন্য পদের তালিকা শিক্ষা দফতরের হাতে পৌঁছোয়নি। উল্লেখ্য, রাজ্যের স্কুলগুলিতে বিষয়ভিত্তিক এবং সংরক্ষণভিত্তিক কত শূন্য পদ আছে, তার খতিয়ান সংগ্রহ করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট জেলা স্কুল পরিদর্শকদের। ‌তাঁরা ওই তালিকা তৈরি করে শিক্ষা দফতরে পাঠালেই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এসএসসি।

রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আশাবাদী শিক্ষকদের একাংশ। কেউ কেউ বেতন নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন। এ বিষয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের হলফনামা দিতে হবে। তাতে রায় পুনর্বিবেচনার মামলায় যদি কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা হলে তো ভালই। কিন্তু রাজ্যের তরফে নির্দিষ্ট সময়ে বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া হলে আগামী মাস থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।’’ আবার চাকরিহারাদের একাংশের দাবি, শিক্ষক-শিক্ষিকারা রিভিউ পিটিশনের চূড়ান্ত পরিণতি না দেখে পরীক্ষা দেবেন না। রাজ্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিলেও তা তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই নিতে হবে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। অন্য দিকে, এখনও এসএসসি-র দফতর ঘেরাও করে রেখেছেন চাকরিহারারা। আগামী ১৫ তারিখ ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের’ তরফে শিক্ষা দফতর ঘেরাও অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিকাশ ভবনের বাইরেও চলছে অবস্থান। যে কারণে এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার আচার্য সদনে নিজের অফিসে না গিয়ে বিকাশ ভবনে বসছেন। এর ফলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের স্বাভাবিক কাজকর্মেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষা দফতরের।

Advertisement

গত ৩ এপ্রিল চাকরি বাতিলের রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দেয় আদালত। বহাল রাখা হয় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ। এর ফলে ২৫ হাজার ৭৩৫ জনের চাকরি যায়। বেতনও ফেরত দিতে বলা হয় দাগিদের (টেন্টেড)। এর পরেই রায়ে বদল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাদের আবেদন ছিল, এত শিক্ষকের চাকরি বাতিল হলে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। অনেক স্কুলে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সংখ্যা শূন্যে গিয়ে ঠেকবে। যার ফলে ভুগতে হবে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। পর্ষদের আর্জি ছিল, যাঁরা ‘দাগি’ বা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ নন, আপাতত তাঁদের চাকরি বহাল থাক। গত ১৭ এপ্রিল সেই আবেদন মেনে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। শর্তসাপেক্ষে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, আপাতত নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকেরা স্কুলে যেতে পারবেন। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের চাকরি বহাল থাকবে। তবে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে ওই রায় কার্যকর হবে না। তাঁদের ক্ষেত্রে পূর্ব নির্দেশই বহাল থাকবে।

এ ছাড়া, আগামী ৩১ মে-র মধ্যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। ওই সময়ের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তারা চলতি বছরেই নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করবে। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে শেষ করতে হবে নিয়োগপ্রক্রিয়া। ওই নির্দেশ মোতাবেক চলতি মাসেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা। তাতে খানিক হলেও আশার আলো দেখছেন শিক্ষাকর্মীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement