মৌসুমী মিস্ত্রি।
ফেসবুক লাইভে বন্ধুর কথা বলছিল দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীটি। আর কথা বলতে বলতেই সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হল সে।
ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের বৈদ্যপাড়া এলাকার। সোনারপুর পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সকালে বছর সতেরোর মৌসুমী মিস্ত্রির দেহ যখন উদ্ধার হল, তখনও তার মোবাইলে খোলা থাকা ফেসবুক লাইভ মোডেই রয়েছে। আত্মঘাতী মৌসুমী সোনারপুরের কামরাবাদ হাই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। সামনের বছরই তার উচ্চ মাধ্যমিকে বসার কথা ছিল।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, প্রণয় ঘটিত কারণেই এই আত্মহত্যা। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় ঘাসিয়াড়ার বাসিন্দা এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল মৌসুমীর। তার সঙ্গে শনিবার একটি অনুষ্ঠানেও গিয়েছিল সে। সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ বাড়ি ফিরে আসে। তার পর সে দিন রাতে ওই তরুণের সঙ্গেই ফেসবুক লাইভে কথা বলতে বলেই আত্মহত্যা করে বলেই অভিযোগ উঠছে।
তরুণীর মা শম্পা মিস্ত্রি নার্সের কাজ করেন। তিনি জানাচ্ছেন, শনিবার নাইট ডিউটি ছিল। ফলে সে দিন সন্ধেতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। তবে, তার আগে মেয়েকে দেখে কিছু একটা সন্দেহ হয়েছিল তাঁর। শম্পা দেবীর কথায়, ‘‘চোখ-মুখ দেখে মনে হয়েছিল মেয়েটা কোনও একটা সমস্যায় আছে। নাইট ডিউটি থাকায় তাড়াতাড়ি চলে যাই। ভেবেছিলাম পরের দিন সকালে বাড়ি ফিরে সব জিজ্ঞাসা করব।’’
এই অবস্থায় উদ্ধার হয় মৌসুমীর দেহ। ফেসবুক লাইভ থেকে নেওয়া স্ক্রিন শর্ট।
শম্পা দেবী আরও বলেন, ‘‘রবিবার সকালে মৌসুমীর বাবা ফোন করে সব জানায়। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসতে বলে। বাড়ি ফিরে সব দেখতে পাই।’’
আরও পড়ুন: ফেসবুক লাইভে আত্মহত্যার ‘পাঠ’ দিয়ে ২০ তলা থেকে ছাত্রের ঝাঁপ!
রবিবার সকালে মৌসুমীকে তার ঘরের সিলিং ফ্যানে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলতে প্রথম দেখে তার ভাই। সে-ই বাবাকে গিয়ে বিষয়টা জানায়। তার পরই খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
তদন্তের স্বার্থে ঘাসিয়াড়ার ওই তরুণকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। ফেসবুক লাইভ করতে করতে আত্মহত্যার করলেও, কেন সেই তরুণ মৌসুমীর পরিবারকে কিছু জানায়নি, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: ‘আমি তোর জীবন থেকে চলে গেলাম’, ফেসবুকে লিখে আত্মঘাতী কিশোর
গত মে মাসেই দমদমের এক তরুণ ফেসবুকে ‘স্টেটাস আপডেট’ করে আত্মঘাতী হয়েছিল। রবিবার সোনারপুরের ঘটনা ফের এক বার সেই ঘটনাকে মনে করিয়ে দিল।