স্কুল হোক বা পাড়া, কোথাও নাবালিকা বিয়ের তোড়জোড় হচ্ছে খোঁজ পেলেই ক্লাবের মেয়েরা যোগাযোগ করে প্রশাসনের সঙ্গে। কিন্তু সেই ‘কন্যাশ্রী ক্লাবে’রই এক ছাত্রীর বিয়ের জোগাড় চলছিল বর্ধমান শহর লাগোয়া নাড়ি গ্রামে। খবর পেয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ওই ছাত্রীর বিয়ে রুখল কন্যাশ্রী ক্লাবের বাকিরা।
নাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ওই মেয়েটি দশম শ্রেণির ছাত্রী। বয়স বছর পনেরো। আগামী ফেব্রুয়ারিতে গুসকরায় তার বিয়ে ঠিক হয়। প্রায় দু’মাস স্কুলে আসছিল না মেয়েটি। তাতেই সন্দেহ হয় কন্যাশ্রী ক্লাবের অন্য সদস্যদের। তারা এক বান্ধবী মারফত যোগাযোগ করে ওই ছাত্রীর সঙ্গে। মেয়েটি বার্তা পাঠায়, ‘বাড়িতে চাপ রয়েছে, তাই বিয়ে করতে হবে’।
এর পরেই সক্রিয় হয় সুদীপা দে, নেহা যাদব, রাজশ্রী সিংহ-সহ কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যেরা। বর্ধমান সদরে সম্প্রতি ‘মাটি উৎসব’-এ আইনি পরিষেবার স্টল থেকে নাবালিকা বিয়ে রুখতে প্রচার চালিয়েছিল তারা। সেই সময় তাদের কয়েক জন রেখে দিয়েছিল বিয়ে ঠেকাতে দরকারি সরকারি আধিকারিকদের ফোন নম্বর। সে সব নম্বরেই ফোন করে তারা।
শেষমেশ শুক্রবার জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ, চাইল্ড লাইন ও পুলিশকর্মীদের নিয়ে কন্যাশ্রীরা নাড়ি গ্রামে মেয়েটির বাড়িতে পৌঁছয়। প্রশাসনের কর্তারা জানান, নাবালিকা বিয়ের কুফল বোঝানোর পরে ওই ছাত্রীর বাবা, মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হলে বিয়ে দেবেন না, এমনই লিখিত মুচলেকা দিয়েছেন।
এ দিন আউশগ্রাম ১ ব্লকের গোন্না গ্রামেও এক নাবালিকার বিয়ে রুখেছে ব্লক প্রশাসন। সেখানেও হাজির ছিল কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েরা। সোমবার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল সেই ছাত্রীর। নাড়ি গ্রামের ঘটনাটি জেনে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জেলা আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রতি দিনই কন্যাশ্রীর মেয়েরা নাবালিকা বিয়ে আটকাচ্ছে। সেখানে তাদেরই এক জনের বিয়ে দেওয়ার তোড়জো়ড় বাঞ্চনীয় নয়।’’