সব্যসাচী এবং সুজিত।—ফাইল চিত্র।
এলাকা দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর আকচাআকচি আবার সামনে এল। নিউটাউনের একটি নালা নিয়ে রাজারহাটের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত ও পূর্ব বেলগাছিয়ার সুজিত বসুর বাগ্যুদ্ধ শুরু হল।
দু’দিন আগে বিধানসভার ভিতরে লবিতে প্রবীণ নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও নবীন অরূপ বিশ্বাসের বাগ্যুদ্ধ হয়ে যায়। মূল কারণ এলাকা দখল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনা বার্তা শোভনদেবকে পৌঁছে দেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানিয়ে দেওয়া হয় প্রকাশ্যে যা হয়েছে, তা যেন আর না হয়। কিন্তু সেই নির্দেশ যে কথার কথা, বুধবার তা ফের প্রমাণ হল।
দু’দিন পর বুধবার বিধানসভার উল্লেখ পর্বে সব্যসাচীবাবু জানান, ভিআইপি রোডে উল্টোডাঙার পরের বাস স্টপ ঘোলাডাঙা থেকে লেকটাউন পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার বিস্তৃত পূর্ত দফতরের একটি খাল জবরদখল হয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে পূর্ত দফতর ব্যবস্থা নিক।
সভার বাইরে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে সব্যসাচী বাবু বলেন, ‘‘পুরো খালটাই বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। আমাকে অনেকেই বলছেন সত্যি কথাটা বলে দিতে।’’ তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কোন সত্যি কথা তিনি বলতে চাইছেন? নালা বোজানোর পিছনে রাজনৈতিক মদত আছে কি? রাজারহাটের বিধায়ক বলেন, ‘‘মদত আছে কি না, বলছি না। তবে রাজনৈতিক মদত না থাকলে কি এ সব হয়?’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘ভিআইপি রোডের ধারে এমনি এখন এক কাঠা জমির দাম ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু, নয়ানজুলিটা বুজিয়ে ভিআইপির সঙ্গে সরাসরি সংযোগ করে ফেলতে পারলে আশপাশের জমির দাম এক থেকে দেড় কোটি টাকা হবে। এতেই বোঝা যায় কেন খাল বোজানোর দরকার হয়ে পড়েছে।’’
পরে সুজিতবাবু সভার বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ওখানে কোনও খাল নেই, রয়েছে আবাসিকদের নিকাশি নালা। পূর্ত দফতরে সেখানে কাজ করছে। সব্যসাচীবাবু কিছু জানেন না। সারা দিন ধরে ইট-বালি-সিমেন্টের হিসেব করলে কি উন্নয়নের কথা জানা যায়?’’ সুজিতবাবুর ব্যাখ্যা: ‘‘ওই নালা থেকে দূষণ ছড়ায় বলে বাসিন্দারাই আমার সাহায্য চান। তার ফলে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার উন্নয়নের কাজে জেএনএনইউআরএম থেকে ৬৬ কোটি টাকা নিয়ে এসে তার মধ্যে এই নালার উপর ঢাকা দেওয়ার কাজও করাই। ওখানে জগার্স পার্ক, ফাউন্টেন ইত্যাদিও করছে পূর্ত দফতর।’’
এর জবাবে সব্যসাচীবাবু বলেন, ‘‘আমি সভার ভিতরে পূর্ত দফতরের প্রতি প্রশ্ন করতে গিয়ে উল্লেখ করেছি। ওই দফতর জবাব দিলে দেবে। বাইরে সাংবাদিকদের কাছে ব্যাখ্যা করেছি। এ নিয়ে কে কী মন্তব্য করল কিছু এসে যায় না। আমার যা বলার কথা, তা বলবই।’’