কেন চাই জোট, সূর্য বোঝালেন শরিকদের

দলের মধ্যে সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল আগেই। বিধানসভা ভোটে বৃহত্তর বিরোধী ঐক্য গ়ড়ে তুলতে এ বার বাম শরিকদের কাছে টানার প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়ল আলিমুদ্দিন। তৃণমূলের মোকাবিলায় সঙ্কীর্ণতা ছেড়ে সব ধরনের গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির যে একজোট হওয়া উচিত, সেই যুক্তিই আলাদা আলাদা করে শরিক নেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। প্রাথমিক আলোচনায় শরিক নেতারাও সেই যুক্তির বিরোধিতা করছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩৫
Share:

দলের মধ্যে সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল আগেই। বিধানসভা ভোটে বৃহত্তর বিরোধী ঐক্য গ়ড়ে তুলতে এ বার বাম শরিকদের কাছে টানার প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়ল আলিমুদ্দিন। তৃণমূলের মোকাবিলায় সঙ্কীর্ণতা ছেড়ে সব ধরনের গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির যে একজোট হওয়া উচিত, সেই যুক্তিই আলাদা আলাদা করে শরিক নেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। প্রাথমিক আলোচনায় শরিক নেতারাও সেই যুক্তির বিরোধিতা করছেন না।

Advertisement

বৃহত্তর ঐক্যের অঙ্গ হিসাবে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী সমঝোতা হবে কি না, তার জন্য আরও কিছু পথ পেরোনো বাকি। কলকাতায় সাংগঠনিক প্লেনামের অবসরেই সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, পরিস্থিতির প্রয়োজনে ‘নমনীয়’ হয়ে কংগ্রেসকে কাছে টানা যেতেই পারে। এই ব্যাপারে সিপিএমের রাজ্য কমিটি বৈঠক করে আনুষ্ঠানিক অবস্থান স্থির করার আগে মঙ্গলবার প্রথমে ফরওয়ার্ড ব্লক এবং পরে সিপিআই নেতৃত্বকে আলিমুদ্দিনে ডেকে তাঁদের মন বোঝার চেষ্টা করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু ও মহম্মদ সেলিম। দিনতিনেকের মধ্যে তাঁদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসার কথা আরএসপি-র সঙ্গেও। নির্বাচনী কৌশলে শেষ পর্যন্ত যে হেতু বামফ্রন্টের সিলমোহর লাগবে, তাই আগাম শরিকদের পাশে নিয়ে ঐকমত্যের চেষ্টা করছেন সূর্যবাবুরা। তার আগে সোমবার সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির বৈঠকেও সূর্যবাবু বলেছেন, কংগ্রেস মানেই ‘নৈব নৈব চ’— ৪০ বছর আগের সেই অনড় অবস্থান ধরে রাখলে চলে না!

বাম সূত্রের খবর, সরাসরি কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতাই হবে, এমন কথা এ দিনের দু’টি বৈঠকে হয়নি। কিন্তু কোন প্রেক্ষাপটে এখন এই সম্ভাবনাও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে, দুই শরিক দলের নেতৃত্বের কাছে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সূর্যবাবু। বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের যুক্তি, নানা কারণে কংগ্রেসকে নিয়ে সিপিএমের মধ্যেও বিরূপ মত আছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সরকার যে পথে চলছে, তাদের রুখতে না পারলে রাজ্যে এর পরে বিরোধীদের আন্দোলন করার মতো অবস্থাও তারা রাখবে না! এই সূত্রেই তাঁর বক্তব্য, তৃণমূলকে উৎখাত করতে সব মানুষকে একজোট করতে হবে। অন্যান্য দলের মধ্যে থাকা গণতন্ত্র-প্রিয় মানুষকে বামপন্থীদের লড়াইয়ে সঙ্গে আনতে হবে। এই কাজে কংগ্রেসকে দূরে সরিয়ে রাখা হলে মানুষই প্রশ্ন করবেন— নিজেদের রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতার জন্য বামপন্থীরা কি তৃণমূলকে সুবিধা করে দিতে চায়?

Advertisement

সূর্যবাবুর এই যুক্তি ফেলে দিতে পারেননি শরিক নেতারা। কংগ্রেসকে নিয়ে তাঁদের দলীয় স্তরে আপত্তি থাকলেও বৈঠকের পরে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পণ্ডা বলেছেন, ‘‘শাসকের বিরুদ্ধে লড়়াইয়ে সব মানুষকেই স্বাগত। এই মর্মে আলোচনা হয়েছে।’’ আর ফ ব-র প্রবীণ রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেছেন, ‘‘রাজনীতিতে সব কিছুই হয়। আলোচনা চলছে। যা সিদ্ধান্ত, বামফ্রন্টে আলোচনা করেই হবে।’’ তবে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হলে উত্তরবঙ্গে শরিকদের আসনে কোপ পড়তে পারে বলে ফ ব নেতারা বিমানবাবুদের বলে এসেছেন, দলে আলোচনা করে তাঁরা চূড়ান্ত মত জানাবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement