রবিবার সাঁকরাইলে সূর্যকান্ত মিশ্র। ছবি: সুব্রত জানা।
রবিবার হাওড়ার সাঁকরাইলের ধূলাগড়িতে সিটুর জেলা সম্মেলনে এসে শিল্পায়ন নিয়ে তৃণমূল তথা মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। সমালোচনা করেন রাজ্য় সরকারের শিল্পনীতি নিয়েও।
সূর্যবাবু বলেন, ‘‘এখন বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন না কী একটা যেন হচ্ছে। সেখানে নাকি শিল্প নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আসলে শিল্প নয়, হচ্ছে গল্প।’’ রাজ্যে শিল্প না হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করেন তিনি। সুর্যবাবুর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আমি বিরোধী দলে থাকাকালীন শিল্পপতিদের বিরক্ত করিনি। এটা পুরো মিথ্যা কথা। সিঙ্গুরে কী হয়েছে সবাই জানেন। আপনি এ রাজ্য থেকে শিল্পকে তাড়িয়েছেন, আপনাকে না তাড়ালে এই রাজ্যে শিল্প হবে না।’’
হাওড়া জেলায় শিল্প নষ্ট হয়ে গিয়েছে মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রীকে সূর্যবাবুর কটাক্ষ, ‘‘এই জেলায় অনেক বড় কারখানা তো বন্ধ হয়েইছে। দোরজিদের জন্য আমরা একটা বাড়ি করেছিলাম। সেখানে আপনি নবান্ন করেছেন। আপনাকে ওখান থেকে জনগণই তাড়িয়ে ফের দোরজিদের বসাবে।’’
তবে তৃণমূলের আমলে রাজ্যে রাস্তাঘাট বা কিসানিমান্ডির নামে কিছু উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে বলে এ দিন স্বীকার করেন সূর্যকান্তবাবু। কিন্তু একইসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ঠিকাদারদের টাকা পাইয়ে দেওয়ার স্বার্থেই এইসব কাজ হয়েছে।’’ঠিকাদারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদেরে বলছি, যাঁর যা টাকা পাওনা আছে তা এই সময়ে তুলে নিন। দু-তিন মাস পরে আর টাকা পাবেন না। শিলিগুড়ি পুরসভায় তৃণমূল ঠিকাদারদের দিয়ে অনেক কাজ করিয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পরে দেখা গেল কাজের টেন্ডার নেই, কাগজ নেই। ফলে কেউ টাকা পাননি।’’
শিল্পের ক্ষেত্রে বাম আমলের সাফল্য দাবি করে সূর্যবাবু বলেন, ‘‘আমরা ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার আগের শেষ তিন বছরে মোট ২৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলের সাড়ে চার বছরের রাজত্বে ৫০০০ কোটি টাকাও বিনিয়োগ হয়নি।’’
বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের তলে তলে আঁতাঁতের উল্লেখ করে সূর্যবাবু বলেন, ‘‘শিল্পসম্মেলনে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীকে সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। আবার মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। এখন দিদিভাই আর মোদিভাই এক হয়ে গিয়েছেন। বাইরে কুস্তি, পর্দার আড়ালে দোস্তি।’’
দুর্নীতির প্রশ্নেও মমতাকে এ দিন বেঁধেন সূর্যবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে উনি অনেক কথা বলেছিলেন, সুজন, গৌতম দেবের বাড়িতে সিবিআই নোটিস ঝুলিয়েছিল। কাউকে কী গ্রেফতার করতে পেরেছেন, উল্টে আপনার মন্ত্রিসভার একজন সদস্য জেলে।’’
মহিষাদলের কাপাসএড়িয়ায় দুষ্কৃতীর গুলিতে পুলিশ খুনের তদন্তেও রাজ্য সরকার গাফিলতি করছে বলে সূর্যবাবুর অভিযোগ। তাঁর প্রশ্ন, বন্দুক উদ্ধারের কী হল। পুলিশের সিজার লিস্টে এ কী সে সবের উল্লেখ আছে?