BJP

শুভেন্দু-দিলীপ ‘বিরোধ’ ক্রমেই বাড়ছে, সামাল দিতে আসরে নামতে হল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে

বেশ কিছু দিন ধরেই রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ নেতৃত্ব একে অপরের বিরুদ্ধে নাম না করে কটাক্ষ ছুড়ে দিচ্ছিলেন। পরিস্থিতি সামলাতে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন বি এল সন্তোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫৪
Share:

শুভেন্দু-দিলীপ বিরোধ মেটাতে ময়দানে কেন্দ্রীয় সরকার। — ফাইল চিত্র।

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘বিরোধ’ মেটাতে অবশেষে আসরে নামলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই নেতাকে নিয়ে বৈঠকে বসেন।

Advertisement

আসানসোলে বুধবার একটি কম্বল বিলির অনুষ্ঠানে তিন জন পদপিষ্ট হয়ে মারা যান। আট জন আহত হন। সেখানে অতিথি ছিলেন শুভেন্দু। সেই ঘটনা নিয়ে এ দিন বিরোধী দলনেতাকে বিঁধে দিলীপের বক্তব্য, “পুলিশের উপরে ভরসা করে এই ধরনের অনুষ্ঠান করা ঠিক নয়। আরও প্রস্তুতি প্রয়োজন ছিল। এ রাজ্যের মানুষ কিছু পাবে শুনলে দৌড়ায়। লক্ষ্মীর ভান্ডারেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দান-খয়রাতি মানবতার অপমান। কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মানুষকে টেনে আনা আমি সমর্থন করিনা। গরিবকে সাহায্য করার অন্য নানা রকম উপায় আছে।”

যদিও এ দিন শুভেন্দু পাল্টা কিছু বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “দিলীপদা আমাদের দলের নেতা। ওঁর পাল্টা আমি কেন মন্তব্য করব? আমি দলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে আগেও কিছু বলিনি। ভবিষ্যতেও কিছু বলব না। আমি শৃঙ্খলাপরায়ণ কর্মী।” বিজেপিরই একটি সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, আসানসোলের ওই অনুষ্ঠান হয়েছিল বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও তাঁর স্ত্রী, পুরসভার বিরোধী নেত্রী চৈতালির ব্যবস্থাপনায়। বিরোধী দলনেতা সেখানে অতিথি ছিলেন। ফলে, দিলীপের খোঁচার সবটা শুভেন্দুর উদ্দেশেই, এমন ধরে নেওয়া উচিত নয় বলে ওই সূত্রের ব্যাখ্যা।

Advertisement

সম্প্রতি বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা ও মুখ্যমন্ত্রীর ‘সৌজন্য’ সাক্ষাৎ থেকে শুরু করে ‘ডিসেম্বর’ তরজা— একাধিক বিষয়ে দিলীপের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে শুভেন্দুকে। হাজরার সভা থেকে শুভেন্দুও প্রাতর্ভ্রমণ নিয়ে নাম না করে দিলীপকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছিলেন। দিল্লি থেকে পাল্টা ‘দমে’র কথা বলেছিলেন দিলীপ। রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে চলতে থাকা কথার লড়াইয়ে নতুন সংযোজন দিলীপের এ দিনের মন্তব্য। তিনি এ দিন ফের সরব হয়েছেন শুভেন্দুর ‘তারিখ রাজনীতি’ নিয়েও। বলেছেন, “তারিখ পে তারিখ! আমি কোনও তারিখের রাজনীতি করি না। কারণ, আমার মতে, শুধু ভোটটাই তারিখ মিলিয়ে হয়।”

বেশ কিছু দিন ধরেই রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ নেতৃত্ব একে অপরের বিরুদ্ধে নাম না করে কটাক্ষ ছুড়ে দিচ্ছিলেন। পরিস্থিতি সামলাতে সন্তোষ এ দিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের একটি অতিথিশালায় তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সূত্রের খবর, তিনি আলাদা করে দু’জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেই রিপোর্ট তিনি অমিত শাহ-জেপি নড্ডাকে পাঠাতে পারেন।

শুভেন্দুর জন্মদিন উপলক্ষে অবশ্য এ দিন একটি নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে সন্তোষ, দিলীপ, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ প্রায় সব শীর্ষ নেতাই উপস্থিত ছিলেন। শুভেন্দুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন দিলীপ, তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শুভেন্দুও। প্রসঙ্গত, এ দিনই সঙ্ঘের বঙ্গ শাখার সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক ছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, দিলীপদের। সেখানে থেকে বার্তা পেয়েই দ্রুত শীর্ষ নেতৃত্ব কোন্দল মেটাতে তৎপর হয়েছেন বলে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement