Suvendu Adhikari

এ বার পরিবর্তনের পরিবর্তন চাই, দলবদলের পর প্রথম সভা থেকেই ডাক শুভেন্দুর

বিজেপি-র সাহায্য না পেলে তৃণমূল দলই উঠে যেত বলেও দাবি করেছেন তিনি। ফের তুলেছেন ‘ভাইপো হঠাও’ স্লোগানও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:৪৯
Share:

পূর্বস্থলীর সভায় শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র

দলবদলের পর প্রথম জনসভা থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর সভা থেকে রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্প কার্যকর না করা এবং তোলাবাজির অভিযোগ তুলে ‘পরিবর্তনের পরিবর্তন’ চাইলেন শুভেন্দু। মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর স্লোগান তুলেছিলেন ‘ভাইপো হঠাও’, পূর্বস্থলীতেও সেই স্লোগান ফের শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর মুখে। বিজেপি-র সাহায্য না পেলে তৃণমূল দলই উঠে যেত বলেও দাবি করেছেন তিনি।

Advertisement

শনিবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তার আগেই ছিন্ন করেছেন তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেও তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে সোমবার। দল এবং তৃণমূল সরকারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার পর এই প্রথম প্রকাশ্য সভায় হাজির হলেন শুভেন্দু। রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে এক মঞ্চে হাজির হয়ে প্রথম দিনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাত খুলে ব্যাট চালালেন রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী।

বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার দিন নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। এ বার পূর্বস্থলীর জনসভা থেকেও ‘ভাইপো হঠাও’ স্লোগান তুলে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্যে তোলাবাজি চলছে। গরু, কয়লা, মাটি— সব কিছু থেকে টাকা তুলছে তৃণমূল। বাকি আছে শুধু কিডনি পাচার। এ বার ক্ষমতায় এলে সেটাও করবে। আর বিজেপি-তে যোগ দিয়ে আমার একটাই লক্ষ্য, ভাইপো হঠাও।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: সায়ন্তনকে দলের শো-কজ, বার্তা কি একইসঙ্গে দেওয়া দিলীপ-বাবুলকে

শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়ায় দলের অনেকেই তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে আক্রমণ শানিয়েছেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি একজন শৃঙ্খলাপরায়ণ কর্মী। মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছি। আমি নৈতিকতা বিসর্জন দিইনি। শুভেন্দু অধিকারী মিরজাফর নয়।’’ বিজেপি-র আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই তিনি দলে যোগ দিয়েছেন জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বিজেপি সাহায্য না করলে ১৯৯৮ সালে তৃণমূল দলটাই উঠে যেত।’’ এর পরেই শুভেন্দুর আহ্বান, ‘‘বাংলায় পরিবর্তনের পরিবর্তন চাই। না হলে রাজ্য বাঁচবে না। সামান্য ২-৪ হাজার টাকার চাকরিতে কারও সংসার চলে না। কৃষকদের কেন্দ্রীয় অনুদান, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করেনি রাজ্য। তার জেরে রাজ্যবাসীই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’’

আরও পড়ুন: কাল কাঁথির সভায় আমন্ত্রণ শিশিরকে, জানালেন, অসুস্থ তাই থাকছেন না

একই মঞ্চে ছিলেন দিলীপ। রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি চালু না করার ইস্যুতে তিনিও তোপ দেগেছেন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। সরব হয়েছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোলাবাজি-দুর্নীতির অভিযোগেও। দিলীপের কথায়, ‘‘রাজ্যে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতির জন্য হাইকোর্ট সেই নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে। ফলে বহু যুবক-যুবতী চাকরি খুইয়েছেন। এক এক জনের কাছ থেকে ১০ লাখ, ১২ লাখ করে টাকা নেওয়া হয়েছে। আমি বলছি, যে নেতাদের টাকা দিয়েছেন, তাঁদের কলার ধরে বলুন, টাকা ফেরত দিতে।’’

আমপানের ত্রাণ নিয়ে তৃণমূলকে দুর্নীতির কাঠগড়ায় তুলে দিলীপের তোপ, ‘‘দিদিমণি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ২০ হাজার টাকা করে ত্রাণের ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা তাঁর দলের লোকেরাই খেয়েছে। আর যখন তালিকা প্রকাশ হল, তখন দেখা গেল তৃণমূলের প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্যরা, যাঁদের কোনও ক্ষতিই হয়নি, তাঁরা টাকা পেয়েছেন। পরে দিদিমণি বললেন, ভুল হয়েছিল। ভুল যদি হবে, তা হলে এক জনও বিজেপি নেতা-কর্মী ভুল করে টাকা পেলেন না কেন? আসলে দুর্নীতি ধরা পড়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন