Supreme Court

৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন চাকরিহারারা!

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি বাতিলের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এবার ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করলেন চাকরিচ্যুতরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৩ ২২:৫৮
Share:

হাই কোর্টের রায়ে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বলা হয়েছে ৩২ হাজার প্রাথমিকের শিক্ষককে। তাঁরা দ্বারস্থ হলেন সুপ্রিম কোর্টের। —প্রতীকী চিত্র।

কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টর দ্বারস্থ হলেন চাকরিচ্যুতরা। বুধবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই প্রাথমিক শিক্ষকরা।

Advertisement

এর আগে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা আপাতত ৪ মাস তাঁদের স্কুলে যেতে পারবেন। তবে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতনকাঠামো অনুসরণ করে তাঁদের বেতন দেওয়া হবে। পরে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশনের বেঞ্চ একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেন। সেই রায়ের ফলে চাকরি বাতিল না হলেও, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বলা হয় ওই ৩২ হাজার প্রাথমিকের শিক্ষককে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দেওয়া হয় অগস্ট মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলতে হবে। সেপ্টেম্বরে মামলাটি আবার শুনবে ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন মামলাকারীরা। তাঁদের দাবি, নতুন করে আর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার প্রয়োজন নেই তাঁদের। পাশাপাশি এই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছিল মোট ৪২,৫০০। এর মধ্যে প্রশিক্ষিত (শিক্ষণের ডিগ্রি বা ডিএলএড থাকা) ৬৫০০ জনকে নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। বাকি ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান। নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন নতুন করে ইন্টারভিউ পাশ করলে ওই শিক্ষকরা আবার চাকরি ফিরে পাবেন। না হলে চাকরি খোয়াতে হবে। পরে মামলাকারীদের আইনজীবী আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের আসল সংখ্যা ৩০ হাজার ১৮৫। ৩৬ হাজার নয়। লেখায় ভুল (টাইপোগ্রাফিক্যাল এরর) হয়েছে। এর পর রায় সংশোধন করা হয়।

Advertisement

প্রিয়ঙ্কা নস্কর-সহ ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী ২০১৬ সালের প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে মামলা করেছিলেন। তাঁদের আইনজীবী আদালতে জানান, এই মামলাকারীদের থেকে কম নম্বর পেয়ে প্রশিক্ষণহীন অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। ওই মামলাতেই উঠে আসে ইন্টারভিউ বিতর্ক। অভিযোগ ওঠে, নিয়ম অনুযায়ী ইন্টারভিউয়ে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নেওয়ার কথা থাকলেও বহু ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন জেলায় যাঁরা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন, তাঁদের তলব করে গোপন জবানবন্দিও নথিবদ্ধ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তার ভিত্তিতেই চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন তিনি।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি বাতিলের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ওই মামলায় হাই কোর্ট বলে, ‘‘একক বেঞ্চ তো আবার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। কাউকে তো নেকড়ের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়নি। তা হলে সমস্যা কোথায়?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন