SIR in West Bengal

স্কুল সামলে এসআইআর-এর কাজ কী ভাবে সম্ভব? বিবিধ সমস্যা নিয়ে কমিশনের কাছে দরবার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের

বুধবার রাজারহাট গোপালপুর এবং রাজারহাট নিউটাউন বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে কমিশন বৈঠক করেছে। সেখানে উঠে এসেছে বিবিধ সমস্যার প্রসঙ্গ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ২০:১৬
Share:

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার প্রস্তুতি চলছে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বাংলায় ভোটার তালিকার নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরলেন বুথ লেভেল অফিসারেরা (বিএলও)। মঙ্গলবার রাতেই শহরে এসেছে কমিশনের প্রতিনিধিদল। বুধবার রাজারহাট গোপালপুর এবং রাজারহাট নিউটাউন বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে তারা বৈঠক করেছে। বৈঠকে ছিলেন উপ নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, কমিশনের তথ্যপ্রযুক্তি শাখার ডিরেক্টর জেনারেল সীমা খন্না। বিভিন্ন সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই বিএলও হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ফলে স্কুলের কাজ সামলে কী ভাবে এসআইআর-এর বাড়তি কাজ সম্ভব, তাঁরা সেই প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

এসআইআর-এর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তা নিয়ে কোনও সমস্যা আছে কি না, বুধবারের বৈঠকে বিএলওদের কাছে জানতে চেয়েছিল কমিশন। তাঁরা জানান, স্কুলের কাজ সামলে এসআইআর-এর কাজ তাঁদের পক্ষে অত্যন্ত কষ্টকর। এ ভাবে কোনও কাজেই তাঁরা নিজেদের ১০০ শতাংশ দিতে পারবেন না। সময় প্রত্যেকের কাছে মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিএলওদের কথা শুনেছে কমিশন। তবে এ-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বিহারের পদ্ধতি মেনেই বাংলাতেও এসআইআর সম্পন্ন হবে।

কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘আমার বাড়ি থেকে স্কুলে যেতে এবং আসতে মোট ১০৮ কিলোমিটার রাস্তা পেরোতে হয়। সোম থেকে শনিবার পর্যন্ত স্কুল খোলা থাকে। এর মধ্যে আমি কী ভাবে এসআইআর-এর কাজ করব? আমাদের স্কুলে ৭৩০ জন পড়ুয়া। শ্রম আইন অনুসারে তো দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ করা সম্ভব নয়!’’ মানসিক শান্তি বজায় না-থাকলে এই ধরনের কাজ কী ভাবে সম্ভব, প্রশ্ন তুলেছেন ওই শিক্ষিকা। এর পরে আর এক শিক্ষক উঠে অনুরূপ সমস্যার কথা জানান। বলেন, ‘‘বাড়়ি থেকে আমার স্কুলের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। আমার স্কুলে আমি ছা়ড়া আর কোনও শিক্ষক নেই। স্কুলের কাজ সামলে কখন আমি এসআইআর-এর কাজ করব?’’

Advertisement

সাধারণ ভাবে বৈঠকে উপস্থিত প্রত্যেক শিক্ষকই এসআইআর-এর কাজের জন্য স্কুল থেকে মাসখানেকের অব্যাহতি চেয়েছেন। কমিশন তাঁদের আবেদন নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে শিক্ষকদের সমস্যাগুলি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে, জানিয়েছেন কমিশনের আধিকারিকেরা। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল বলেছেন, ‘‘কমিশনের নিয়ম সারা দেশের জন্যই সমান। বিহারে যে ভাবে এসআইআর হয়েছে, এ রাজ্যেও সে ভাবেই হবে। তবে আপনারা যা বলেছেন, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করব।’’ যে শিক্ষক স্কুলে একা আছেন, তাঁর বিষয়টি আলাদা করে ভেবে দেখা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যপ্রযুক্তি শাখার প্রধান হিসাবে এসআইআর পর্বে সীমার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাজারহাটের বৈঠকে বিএলওদের আলাদা করে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, মোবাইলের অ্যাপের মাধ্যমে এক ক্লিকেই তথ্য আপলোড করা যাবে। ফলে এসআইআর-এর কাজ যতটা কঠিন বলে মনে হচ্ছে, ততটা কঠিন হবে না। কোনও সমস্যা হলে তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে বলেছেন সীমা। নম্বরও দিয়ে দিয়েছেন। উৎসাহের সঙ্গে এসআইআর-এর কাজ করতে বিএলওদের অনুরোধ করেছেন সীমা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement