বর্ণময়: ব্রিগেডে গিয়েছিলেন রাজ্যের ভুটিয়া বোর্ডের প্রতিনিধিরা। ছিলেন পাহাড়ের অন্য বোর্ডের লোকজনও। শনিবার কলকাতায় ব্রিগেডের পথে ভুটিয়াদের নাচ। নিজস্ব চিত্র
সিমজি ড্যান্স!
এত দিন মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে গেলে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাহারি এবং তাঁদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নাচ-গানের মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানাতেন। এ বার সেই রঙিন আবহ নেমে এল কলকাতার রাজপথে। দার্জিলিং-কালিম্পংয়ের ভুটিয়া সম্প্রদায়ের মনভোলানো সেই সিমজি নাচ দেখতে তখন রাস্তার দু’পাশে জড়ো হয়ে গেল লোক। নাচ দেখতে দেখতে এক কিশোর হাততালি দিয়ে বলে উঠল, ‘‘বাহ!’’ ভিড় এতটাই যে শেষমেশ পুলিশি হস্তক্ষেপে ভুটিয়াদের ব্যারিকেড করে ব্রিগেডের দিকে রাস্তা করে দেওয়া হল।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে পাহাড়ে মোট ১৫টি বোর্ড তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভুটিয়া, ভুজেল, তামাং, শেরপা, লিম্বু, রাই, মঙ্গর... সব বোর্ডের প্রতিনিধিকে এ দিন দেখা গিয়েছে ব্রিগেডে। মমতার মঞ্চে ছিলেন বিনয় তামাং, অনীত থাপা। তাঁরা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মতো একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। কিন্তু উন্নয়ন বোর্ডগুলি তো রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। তা হলে তাঁরা কেন এসেছেন?
ভুটিয়া বোর্ডের প্রধান পালদেন ভুটিয়া বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের মানুষের জন্য যা করেছেন, এর আগে কোনও সরকার তা ভাবেওনি। সে জন্য আমরা এসেছি ব্রিগেডে যোগ দিতে।’’ ভুজেল বোর্ডের প্রধান নবীন থাপাও বলেন, ‘‘দিদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। তাই আমাদের ব্রিগেডে আসা।’’
শুক্রবার রাতেই কালিম্পং ও দার্ডিলিংয়ের এই ১৫টি সম্প্রদায়ের লোকজন এসে গিয়েছিলেন কলকাতায়। তখনই ঠিকে হয়ে গিয়েছিল, কী ভাবে তাঁরা শহরের রাজপথে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান তুলে ধরবেন। সে কথা জানিয়ে পালদেন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে বারবার পাহাড়ে গিয়ে আমাদের খোঁজখবর নেন, সেটাও তো আমাদের বড় প্রাপ্তি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পাহাড়ের উন্নয়ন বোর্ডগুলি হওয়ার পরে স্কুলছুট নেই বললেই চলে। বেকারত্ব কমে গিয়েছে।’’
এ দিন মিছিলে শিয়ালদহ থেকে হেঁটেছেন ভুটিয়া সম্প্রদায়ের প্রায় দেড় হাজার মানুষ। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে দু’পাশ দিয়ে র্যালি করে তখন পুরুষ-মহিলা ভুটিয়ারা। সামনে ঢোল, বাজনা-সহ সিমজি ড্যান্স।
কালিম্পং জেলা তৃণমূলের সভাপতি সতীশ থিং বলেন, ‘‘সিমজি ড্যান্স ভুটিয়া সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অঙ্গ।’’
শনিবার সেই নাচে মজল কলকাতাও।