আমসত্ত্ব, চিটবাদাম, মৌরী লজেন্স— টুকটাক ভি-ডে স্পেশাল এমন উপহার হাতে হাতে ঘুরছিলই! বিধানসভার এক ঘর থেকে আর ঘরে, অলিন্দে ঘুরতে ফিরতে পুরুষ সতীর্থদের হাতে ‘উপহার’ দিতে দিতেই হঠাৎ মহিলা ব্রিগেডের খেয়াল হল, ‘‘আরে! ভ্যালেন্টাইন্স ডে স্পেশাল একটা খাওয়া-দাওয়া হলে কেমন হয়!’’
ভাবনার সঙ্গে সঙ্গেই তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেড ঠিক করে ফেললেন, বুধবার বিধানসভায় ভ্যালেন্টাইন্স ডে স্পেশাল ভূরিভোজ হোক। মঙ্গলবার ভি-ডে থাকলেও সকলে মিলে একসঙ্গে সেলিব্রেশনের কোনও আয়োজন করা হয়ে ওঠেনি ঠিকই। কিন্তু একদিন বিলম্বে ক্ষতি কী!
তাই মঙ্গলবার বাজেট-বিতর্কের মধ্যেই কখনও বিধানসভা কক্ষে, কখনওবা মন্ত্রীদের ঘর ঘুরে রীতিমতো চাঁদা তুলে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রমীলা বাহিনী! নীরস তর্কাতর্কি, সরকার আর বিরোধীর
বিবাদ, ধস্তাধস্তির মধ্যেও ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষে মহিলা সতীর্থরা ‘ট্রিট’ দিচ্ছেন শুনে পুরুষ মন্ত্রী, বিধায়করা যে যেমন পেরেছেন, চাঁদা দিয়েছেন। কিন্তু প্রবীণ এক মন্ত্রীর সখেদ মন্তব্য, ‘‘আমার কাছে কোনও টাকা ছিল না! টাকা দিতে পারিনি! শুধু বললাম, আমাদের থেকে টাকা নিয়ে আমাদেরই খাওয়াবে!’’ মন্ত্রী অসীমা পাত্র, প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ, চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষ, কাশীপুর-বেলগাছিয়ার মালা সাহারা ট্রেজারি বেঞ্চের বিধায়কদের থেকে চাঁদা নিয়ে ঠিক করেছেন ফ্রায়েড রায়েস, চিলি চিকেন, ফিস ফ্রাই খাওয়াবেন। আজ, বুধবার অধিবেশনের বিরতিতে ভি-ডে স্পেশাল
ভূরিভোজে বিধানসভার ঘর-বারান্দা ম-ম করবে। তা হলে কব্জি ডুবিয়ে বসে খাওয়ার বন্দোবস্ত হচ্ছে কী? এক মহিলা বিধায়ক বুঝিয়ে দিলেন, ‘‘তেমন বড় আয়োজন সম্ভব নয়। প্যাকেটেই ব্যবস্থা হবে মনে হচ্ছে!’’
হঠাৎ করে মহিলা বন্ধুদের এমন ‘ভালবাসা’য় আপ্লুত হলেও এক তৃণমূল বিধায়কের টিপ্পনী, ‘‘খাওয়া-দাওয়াটা আজ হলেই ভাল হতো। কাল তো আবার স্ল্যাপ ডে!’’