সবংয়ে তৃণমূলের বাজি মানস-জায়া

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকার সময়ে স্ত্রী গীতা ভুঁইয়া এআইসিসি-র সদস্যে হয়েছিলেন। তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভায় যাওয়ার পরে এ বার স্ত্রী পেলেন বিধানসভা উপনির্বাচনের টিকিট! সবংয়ের ভার শেষ পর্যন্ত মানস ভুঁইয়ার হাতেই ছাড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩২
Share:

গীতা ভুঁইয়া ও মানস ভুঁইয়া। —ফাইল চিত্র।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকার সময়ে স্ত্রী গীতা ভুঁইয়া এআইসিসি-র সদস্যে হয়েছিলেন। তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভায় যাওয়ার পরে এ বার স্ত্রী পেলেন বিধানসভা উপনির্বাচনের টিকিট! সবংয়ের ভার শেষ পর্যন্ত মানস ভুঁইয়ার হাতেই ছাড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

তৃণমূল ভবনে রবিবার দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতিকে পাশে বসিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, মানসবাবুর ছেড়ে দেওয়া সবং আসনে বিধানসভা উপনির্বাচনে জোড়াফুলের প্রতীকে লড়বেন মানস-জায়া গীতারানি। সেই বাম জমানায় ১৯৮২ সাল থেকে শুরু করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট ৬ বার সবং থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন মানসবাবু। প্রতি বারই কংগ্রেসের প্রতীকে, শেষ বার বাম সমর্থনে। তৃণমূলে যোগ দিয়ে রাজ্যসভায় যাওয়ার পরে বিধায়ক-পদে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। সবং-অন্তপ্রাণ মানসবাবু এলাকার উন্নয়নে যা কাজ করেছেন, গীতাদেবীকে প্রার্থী করলে তার সুবাদেই আসনটি তারা জিতবে বলে তৃণমূল শিবির আশাবাদী।

তবে সদ্য তৃণমূলে পা রেখেই রাজ্যসভা থেকে বিধানসভার টিকিট, দু’টোই ভুঁইয়া পরিবারে চলে যাওয়ায় শাসক দলের স্থানীয় মহলে অসন্তোষ আছে। দলীয় একটি সূত্রের খবর, সবংয়ে মানস-বিরোধী শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতিকে প্রার্থী করতে চেয়েছিল সেখানকার আদি তৃণমূল গোষ্ঠী। সেটা না হওয়ায় অমূল্যবাবু এবং তাঁর অনুগামীরা ভোটের প্রচারে বেঁকে বসতে পারেন বলেও রাজ্য নেতৃত্বের আশঙ্কা রয়েছে। যে কারণে মমতা শনিবার অমূল্যবাবুকে কলকাতায় ডেকে গীতাদেবীর জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন। পার্থবাবুও এ দিন বলেন, ‘‘আমরা জেলা এবং রাজ্য স্তরে দীর্ঘ আলোচনার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন নিয়ে সবংয়ের উপনির্বাচনে গীতারানি ভুঁইয়াকে প্রার্থী করছি। আমরা সকলে মিলে ওই আসনে জয়ের জন্য ঝাঁপাব।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, অমূল্যবাবু এ দিন সকাল থেকে নিজের বাড়িতে অনুগামীদের সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠক করেছেন। যদিও অমূল্যবাবু বলেন, “দলনেত্রী আমাকে ডেকে পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মেনে চলব।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শনিবার ফিরতে রাত হয়েছিল। তাই সকালে কর্মীদের অনেকে এসেছিলেন দলনেত্রী কী বলেছেন, তা জানতে।” তা হলে কি এ বার গীতাদেবীর জন্য প্রচারে নামছেন? অমূল্যবাবুর জবাব, “গীতা ভুঁইয়া আমাদের কাছে বড় বিষয় নয়। জোড়াফুল প্রতীকই শেষ কথা। দলে অনেকে এসেছেন, অনেকে গিয়েছেন। কিন্তু আমরা ১৯৯৮ সাল থেকে মাটি কামড়ে তৃণমূলের প্রতীকে যিনিই দাঁড়িয়েছেন, তাঁর জন্য লড়াই করেছি। আগামী দিনেও করব।”

বিজেপি অবশ্য পরিবারতন্ত্রের খোঁচা দিতে ছাড়েনি! বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “কংগ্রেস ও তৃণমূল, দু’দলেই পরিবারতন্ত্র রয়েছে। পরিবারতন্ত্র না থাকলে দল দু’টো শেষ হয়ে যাবে!’’ তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ অংশকেই কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি ও কংগ্রেস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement