‘বিজেপি-বাড়িতে যাই কী ভাবে!’ দিদিকে বলো কর্মসূচিতে ভয় তৃণমূলের

জনসংযোগ কর্মসূচিতে সেই সব বিরোধী, মূলত বিজেপি সমর্থকদের কাছে টানাই এ বার তৃণমূলের লক্ষ্য বলে দলের এক সূত্রে খবর।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

সমর্থকেরা তো আছেনই। কিন্তু যাঁরা সমর্থন করেননি, তাঁরা কী ভাবছেন!

Advertisement

জনসংযোগ কর্মসূচিতে সেই সব বিরোধী, মূলত বিজেপি সমর্থকদের কাছে টানাই এ বার তৃণমূলের লক্ষ্য বলে দলের এক সূত্রে খবর। আজ, শুক্রবার থেকে তৃণমূল বিধায়কদের যে গ্রাম সফর কর্মসূচি শুরু হচ্ছে, সেখানেও তাই এমন এলাকা বাছা হয়েছে, যেখানে বাড়ছে গেরুয়া। এমনকি, যাঁদের বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল বিধায়কদের, তাঁদেরও অনেকেই বিজেপি সমর্থক। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এর পিছনে রয়েছেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর।

এ নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূল বিধায়কদের একাংশ শঙ্কিতও। বৃহস্পতিবার দুপুরে তৃণমূলের এক জেলা নেতার কাছে এসে কার্যত কান্না জুড়ে দেন দলের এক বিধায়ক। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, ওই বিধায়ক জেলা নেতাকে বলেন, ‘‘দাদা দেখেছেন, কাদের নাম পাঠানো হয়েছে? আমাকে যে চার জনের বাড়িতে যেতে হবে, তাঁদের মধ্যে দু’জনই তো বিজেপির। এখন বিজেপির লোকেদের বাড়িতে যাই কী ভাবে বলুন তো!’’

Advertisement

জেলা নেতার কিছু করার ছিল না। কারণ, কোন বিধায়ক কোন এলাকায় কার বাড়িতে যাবেন, সেই তালিকা কেন্দ্রীয় ভাবে তৈরি হয়েছে। সঙ্গে গ্রামের জনসংখ্যার যাবতীয় হিসেব ‘ভিলেজ ডেমোগ্রাফিক্স’ শীর্ষক তালিকায় ও সংশ্লিষ্ট বুথে লোকসভার ফলাফল ‘বুথ অ্যানালিসিস’ নামে আর একটি তালিকায় বিধায়কদের দেওয়া হয়েছে। তা অন্যথা করার জায়গা নেই। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও বলেন, ‘‘দলের নির্দেশ সবাইকে মানতে হবে। কেউ বিজেপির সমর্থক হতেই পারেন। তাঁদের সঙ্গে জনসংযোগে আপত্তি কোথায়?’’

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি ঘোষণার দিন মমতা নিজেই বিধায়কদের গ্রাম সফরের কথা জানিয়েছিলেন। দলের এক সূত্রে খবর, ২ থেকে ৫ অগস্টের মধ্যে বিধায়কদের গ্রামে গ্রামে যেতে হবে। এটা প্রথম পর্ব। এই পর্বে কারও কাছে ৩ জনের, কারও কাছে ৪ জনের নাম পাঠানো হয়েছে। বিধায়কদের যে ‘ভিলেজ ভিজিট কিট’ দেওয়া হয়েছে, সেখানেই রয়েছে ওই ‘ভিলেজ ইনফ্লুয়েন্সার’-দের নামধাম। তৃণমূল সূত্রে খবর, গ্রামের ওই সব প্রভাবশালীদের সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি তুলে নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠাতে হবে বিধায়কদের।

তৃণমূল সূত্রে খবর, গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীকে আমকোপায় গিয়ে ৪ জনের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি ৩ জনের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন কর্ণগড়ে। খড়্গপুরের (গ্রামীণ) বিধায়ক দীনেন রায় গোপালিতে এবং নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ বেলদায় গিয়ে ৪ জনের সঙ্গে দেখা করবেন। এই সব এলাকাতেই শক্তি বেড়েছে গেরুয়ার। জেলার এক তৃণমূল বিধায়কের স্বীকারোক্তি, ‘‘আমাকে চার জনের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে এক জন আগে তৃণমূল করতেন। এখন সক্রিয়ভাবে বিজেপি করেন। জানি না, কী হবে।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘এ ভাবে মানুষের মন পাওয়া যায় না। তৃণমূলের বিধায়কেরা গ্রামে রাত কাটালেও আর কিছু হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন