ধর্মতলায় মঙ্গলবার খুঁটিপুজো তৃণমূলের। — নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির আগে ধর্মতলার মোড়ে মঙ্গলবার হয়ে গেল খুঁটিপুজো। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের নেতা, মন্ত্রী-সহ কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা। এই খুঁটিপুজোর পরেই দলের তরফে ঘোষণা করা হল যে, প্রতি বারের মতো এ বছরও ২১ জুলাই (আগামী সোমবার) নজিরবিহীন ভিড় হবে তৃণমূলের কর্মসূচিতে। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই কথা মাথায় রাখলে এই কর্মসূচি রাজ্যের শাসকদলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। তা ছাড়া ওই কর্মসূচির তিন দিন আগে, ১৮ জুলাই রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সে দিক থেকেও তৃণমূলের এ বারের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ধর্মতলার মোড়ে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে, যেখানে ২১ জুলাই কর্মসূচির মঞ্চ বাঁধা হয়, মঙ্গলবার সেখানেই হল খুঁটি পুজো। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষ, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, শ্রেয়া পাণ্ডে-সহ দলের নেতানেত্রীরা। সায়নী বলেন, ‘‘১৯৯৩ সালে তরতাজা ১৩টি প্রাণ চলে যায়। তাঁদের বলিদানকে স্মরণ করে ২১ জুলাই শহিদ সভা করব। প্রতিবারের মতো এ বারও নজিরবিহীন ভিড় দেখতে পাব। এই মঞ্চে আমাদের শক্তিপ্রদর্শনের জায়গা থাকে।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মা-মাটি-মানুষ মমতার সঙ্গে রয়েছে। যতই নাড়ুক কলকাঠি, ২৬-এ আবার হাওয়াই চটি।’’
রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপিকেও কটাক্ষ করেন সায়নী। এ রাজ্যে চলতি সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি। ১৮ জুলাই, আগামী শুক্রবার দুর্গাপুরে কর্মসূচি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। সায়নী প্রধানমন্ত্রীর নাম না করে বলেন, ‘‘২০২৬ সালের ভোট যত এগোবে, তত এই রাজ্যে ডেলি প্যাসেঞ্জারি বাড়বে। তিনি এবং তাঁর নেতৃত্ব প্লেনে, বাসে, ট্রেনে রাজ্যে আসবেন।’’ প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগেও বার বার এ রাজ্যে সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বার বার বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে। মঙ্গলবার সায়নী বলেন, ‘‘এখানে এসে লাভ হবে না। বাংলার মানুষ জানেন, বিজেপি বাংলাকে ঘৃণা করে। বাঙালিকে ঘৃণা করে।’’ সম্প্রতি, বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাঙালিদের বাংলাদেশি দাগিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। সেই প্রসঙ্গ তুলেই সায়নী বলেন, ‘‘বিজেপিশাসিত রাজ্য যদি বাঙালিদের নিরাপত্তা দেয়, বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে যদি দাগিয়ে না দেয়, তা হলে বুঝতে পারব আপনারা বাংলা, বাঙালিকে ভালবাসেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘১৮ তারিখ মোদীজি আসছেন, আসুন। জিততে পারবেন কি না, সেটাই বিষয়! বঙ্গ বিজেপির বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। তৃণমূল মাঠে থেকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে। মোদীজি এবং বিজেপি নেতৃত্বকে বলব, এত আসা যাওয়ার খরচ করবেন না, মানুষের করের টাকা নষ্ট করবেন না। এখানেই বাড়ি নিয়ে থাকুন।’’