পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী।
পঞ্চায়েত ভোটে নদিয়ায় সন্তোষজনক ফল না হওয়ায় চার জন মন্ত্রীকে সেখানে গিয়ে একসঙ্গে সভা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শুক্রবার দলীয় সভায় নেত্রীর সেই নির্দেশ শুনে সোমবার কৃষ্ণনগরে সভা করেন জেলার পর্যবেক্ষক ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পঞ্চায়েতে বিজেপির উত্থানের মোকাবিলায় এ দিনের জনসভায় আশ্বাস দেওয়া হয় তৃণমূল মানুষের ‘পাশে দাঁড়িয়ে’ লড়াই করবে। পাশাপাশি বিজেপির হুমকির বিরুদ্ধে পাল্টা হুঁশিয়ারিও দেন মন্ত্রীরা।
এ বার পঞ্চায়েতে নদিয়ার তেহট্ট, নাকাশিপাড়া, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ, করিমপুরের মতো বিভিন্ন এলাকায় ফল আশানুরূপ হয়নি। মমতা দলীয় সভায় এলাকাগুলির উল্লেখও করেছিলেন। এলাকার স্থানীয় বিধায়করা ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করছেন না বলে উষ্মাও প্রকাশ করেন তিনি। নদিয়ায় তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি পুনরুদ্ধারে একঝাঁক নেতাকে পাঠিয়ে বিজেপিকে বার্তা দিতে চেয়েছেন মমতা। মালদহ, মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের জমি শক্ত করার অন্যতম কারিগর শুভেন্দু কৃষ্ণনগরে এ দিন বলেছেন, ‘‘ব্লক স্তরে মিটিং, মিছিল করতে হবে। কৃষ্ণনগর, চাপড়া, তেহট্ট, নাকাশিপাড়া যেখানে যখন লড়াই করবেন, আমাকে ডাকবেন। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে আপনাদের পাশে থেকে লড়াই করব।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব যতই মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ততই তৃণমূলকে ‘কুকথা’য় আক্রমণ করছেন। কখনও এনকাউন্টারে মেরে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন, কখনও গুলি করে মারার কথা বলছেন। এ দিন কলকাতায় গাঁধী মূর্তির পাদদেশে বিজেপির সভায় দিলীপবাবু ফের তৃণমূলের নাম না করে হুমকি দেন, ‘‘সময় আসছে। আর কষ্ট করে বাইরে গিয়ে উন্নয়ন দেখতে হবে না। বাড়িতে বসেই উন্নয়ন দেখবেন। শুধরে না গেলে ব্যবস্থা হবে। হাসপাতালে জায়গা হবে না। ব্যান্ডেজ করার জায়গাও থাকবে না। আর দু’চার হাজার নয়, সংখ্যাটা লক্ষে পৌঁছতে পারে।’’
আরও পড়ুন: অন্য কারও নামে কি পড়েছেন গুরুং-কন্যা
যার জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু বলেন, ‘‘এ সব কথা তো চম্বলের ডাকাতরা বলে। এ কোন চম্বলের ডাকাত এল?’’ দিলীপবাবুকে পার্থবাবুর পাল্টা হুঁশিয়ারি, ‘‘ওরা আমাদের কর্মীদের হুমকি দেবে আর আমরা আঙুল খাব, এটা ভাবাব কোনও কারণ নেই। আমরা সহনশীল মানে দুর্বল নই।’’ দিলীপবাবুর একের পর হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিরোধে মহিলাদের পথে নামার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘আঁচলের পাঁচিল তুলুন আপনারা।’’ অঝোর বৃষ্টির মধ্যেও সভায় মানুষের ভিড় দেখে ফিরহাদ বলেন, ‘‘বিজেপি এসে দেখে যাক, বৃষ্টির মধ্যেও সভা কাকে বলে!’’