Abhishek Banerjee

রাজনৈতিক কারণেই কি সায়নীকে তলব? প্রশ্ন শুনে অভিষেক বললেন, ইডি, সিবিআই প্রতিহিংসাপরায়ণ

ভোটের মুখে সায়নী ঘোষকে বার বার তলব করা প্রসঙ্গে অভিষেক ইডি এবং সিবিআইয়ের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানান, বিজেপি নেতাদের তলব করলে তবে ওই সংস্থাগুলি ‘নিরপেক্ষ’ বলে মানবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৩ ১৯:০৯
Share:

(বাঁ দিকে) তৃণমূল যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে অভিনেত্রী তথা যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষকে দু’বার তলব করেছে ইডি। প্রথম বার গেলেও দ্বিতীয় বার সায়নী আইনজীবী মারফত নথিপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন সিজিও কমপ্লেক্সে। ভোটের আগে সায়নীকে বার বার তলব কি রাজনৈতিক কারণে? বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবের ‘মিট দ্য প্রেস’-এ এই প্রশ্ন শুনে তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ’ বলে পাল্টা আক্রমণ শানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে অভিষেককে প্রশ্ন করা হয়, পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের মাঝে সায়নীকে ইডি তলব করছে। একে কি তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে মনে করেন? উত্তরে অভিষেক বলেন, ‘‘শুধু সায়নী বলে নয়, প্রতি ক্ষেত্রেই এটা করা হয়। নবজোয়ার যাত্রার মাঝে আমাকেও এক বার ইডি, এক বার সিবিআই আলাদা করে ডেকে পাঠিয়েছে। এমনকি, আমার স্ত্রী এবং সন্তানকেও বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি! আটকে দেওয়া হয়েছে। ইডি-সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে আমি আগেও অনেক বার কথা বলেছি। যে দিন ওরা বিজেপি নেতাদেরও ডাকবে, সে দিন বুঝব এজেন্সি নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে।’’

নারদ মামলার ইঙ্গিত দিয়ে অভিষেক আরও বলেন, ‘‘যাঁদের ক্যামেরায় টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের ডাকলে ইডিকে নিরপেক্ষ বলে মানব। ললিত মোদী, নীরব মোদী কিংবা বিজয় মাল্যকাণ্ডের নির্যাস কী? ইডি বা সিবিআই সেই অর্থনৈতিক তছরুপে অভিযুক্তদের কি এক দিনের জন্যেও ডাকবে না?’’

Advertisement

কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাই বলেছেন অভিষেক। কিন্তু তলব করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা বা পরিবারকে হেনস্থা করায় তাঁর আপত্তি। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদাহরণও টেনেছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় যদি দিল্লিতে গিয়ে বিজেপির পতাকা নিতেন, তা হলে তিনি আজ হতেন ধোয়া তুলসীপাতা। যেমন অজিত পওয়ার হয়েছেন।’’

অভিষেকের কথায় উঠে এসেছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে অজিতের নেতৃত্বে ন’জন বিধায়কের ‘ডিগবাজি’র প্রসঙ্গও। তিনি জানান, অজিতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এনসিপির যে নেতারা বিজেপি-শিবসেনা সরকারে যোগ দিয়ে শপথগ্রহণ করেছেন, সেই ন’জনের বিরুদ্ধেই সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছে। শপথগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ‘ধোয়া তুলসীপাতা’ হয়ে গিয়েছেন বলে দাবি অভিষেকের। এজেন্সি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ইডির কাজ তদন্ত করে মানুষের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া। নেতাদের বেছে বেছে বিজেপিতে পাঠানো নয়।’’

প্রসঙ্গত, অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রা চলাকালীন নিয়োগ মামলায় ধৃত বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় তাঁকে প্রথমে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। কর্মসূচি মাঝপথে স্থগিত রেখে বাঁকুড়া থেকে তিনি নিজাম প্যালেসে এসে হাজিরা দিয়েছিলেন। ৯ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। পরে ইডি আবার ডাকে অভিষেককে। কিন্তু তিনি সে সময় সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘ভোটের আগে সম্ভব নয়। ভোটের পর দেখা যাবে।’’

এর পর গত ৫ জুন কলকাতা বিমানবন্দরে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকে দেন অভিবাসন দফতরের কর্মীরা। রুজিরার ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা যায়, দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি দুবাইয়ের বিমান ধরার জন্য বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। বিমান ধরার আগেই তাঁকে ‘বাধা’ দেওয়া হয়। তাঁকে নোটিসও ধরায় ইডি। সেই সময় রুজিরাকে আটকানোর প্রসঙ্গ টেনে এনে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অমানবিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোটিস অনুযায়ী ৮ জুন ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন রুজিরা। প্রায় চার ঘণ্টা পর সেখান থেকে বেরোন অভিষেক-পত্নী। ভোটের আগে সায়নীকে তলবের প্রসঙ্গে অভিষেক নিজের এবং নিজের পরিবারের হেনস্থার কথা তুলেই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কটাক্ষ করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement