Baishakhi Banerjee

বৈশাখীর স্বামী মনোজিৎকেও ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু ওয়েবকুপায়

তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবার তৃণমূল ভবনে হওয়া সেই বৈঠকে আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনার মুখে পড়েন ওয়েবকুপার সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ১৫:৪১
Share:

মনোজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

নিঃশর্ত আনুগত্যেও শেষ রক্ষা হল না। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে এ বার তাঁর স্বামী তথা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডলকেও ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল তৃণমূলে। দলের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার বৈঠকে রবিবার বৈশাখী এবং মনোজিৎকে সংগঠন থেকে দূরে রাখার দাবি তোলেন সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা ওয়েবকুপার অভিভাবক পার্থ চট্টোপাধ্যায় সে দাবিতে সিলমোহর দিয়ে দেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

Advertisement

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক যেমনই হোক, তাঁর স্বামী মনোজিৎ মণ্ডল কিন্তু দলের প্রতি বরাবরই অনুগত থেকেছেন। ওয়েবকুপার সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক বছরখানেক আগেই ছিন্ন হয়েছে। কিন্তু মনোজিৎ মণ্ডল এখনও ওয়েবকুপার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপ্টারের সম্পাদক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর আনুগত্যও প্রশ্নাতীত। তা সত্ত্বেও আচমকা মনোজিৎকে ঝেড়ে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ওয়েবকুপা সূত্রে জানা যাচ্ছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার সংগঠনে মনোজিতের ভূমিকাকে দল আদৌ আর কোনও স্বীকৃতি দিচ্ছে কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।

লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তৃণমূলনেত্রীর রোষের মুখে পড়তে হয়েছে অনেক সিনিয়র নেতাকেই। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁদের অন্যতম। সরকারি কর্মীদের সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব পার্থর হাত থেকে কেড়ে নিয়েছেন মমতা, দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীকে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন এখনও পার্থর দায়িত্বেই রাখা হয়েছে। কিন্তু পার্থর দায়িত্বে থাকা জেলাগুলিতে দলের ফল কেন খারাপ, তাঁর হাতে থাকা সংগঠনগুলো কেন বেহাল, সে প্রশ্নও তুলে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

Advertisement

নেত্রীর মেজাজ বুঝতে পেরে কোর কমিটি বৈঠকের পরেই নিজের হাতে থাকা সংগঠন ওয়েবকুপার বৈঠক ডাকেন পার্থ। তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবার তৃণমূল ভবনে হওয়া সেই বৈঠকে আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনার মুখে পড়েন ওয়েবকুপার সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু। সংগঠন ঠিক মতো চালাতে পারছেন না কৃষ্ণকলি— পার্থর ভর্ৎসনার সারকথা এই রকমই ছিল বলে খবর। যদিও তা নিয়ে পার্থ বা কৃষ্ণকলি প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।

ওয়েবকুপা সূত্রের খবর, রবিবার ভর্ৎসিত হওয়ার পরে বিচলিত কৃষ্ণকলি বৈঠকের শেষ পর্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেন, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হলেও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বা মনোজিৎ মণ্ডলকে যেন কোনও দায়িত্ব দেওয়া না হয়। সে রকম কিছুর প্রশ্নই ওঠে না, জানিয়ে দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও, খবর ওয়েবকুপা সূত্রের।

আরও পড়ুন: ভাটপাড়া পুরসভা দখল করল বিজেপি, পুরপ্রধান হলেন অর্জুনের ভাইপো সৌরভ

আরও পডু়ন: কলকাতা বিমানবন্দরে গ্রেফতার বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহ, ফাঁসানো হয়েছে, দাবি দলের

বৈশাখী এই মুহূর্তে রাজ্যের বাইরে। ফোনে তিনি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘আমার কথা ওই বৈঠকে উঠেছে বলে আমি শুনেছি। কেন উঠল জানি না। আমার সঙ্গে বছরখানেক ধরে ওয়েবকুপার কোনও সম্পর্কই নেই।’’ তবে মনোজিৎ মণ্ডল প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবস্থানের যে খবর তিনি পেয়েছেন, তাতে বৈশাখীর প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র। তৃণমূল নেতৃত্বকে প্রবল কটাক্ষে বিঁধে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওঁরা কি সর্বত্র বৈশাখীর ভূত দেখছেন? আমি তো সংগঠনে কোথাও নেই। তার পরেও ওঁরা আপন মনেই আমাকে বধ করার একটা খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। কী আনন্দ পাচ্ছেন জানি না। কিন্তু এই খেলায় নিজেদের লোককেই চিনতে ভুল করছেন। মনোজিৎ মণ্ডল আমার স্বামী হতে পারেন। কিন্তু মনোজিত আর আমার রাজনৈতিক পথ পুরোপুরি আলাদা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মনোজিতের আনুগত্য কখনও টাল খায়নি। তাই মনোজিৎকে কোনও দায়িত্ব না দেওয়া বা তাঁকে সংগঠন থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত আমার কাছে দুর্বোধ্য ঠেকছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন