বুধবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত মামলায় মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনকে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ২৬ নভেম্বর ফের এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। বুধবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিলেন, শীর্ষ আদালতে বঙ্গের শাসকদদলের তরফে জোড়া প্রশ্ন তোলা হবে।
কল্যাণের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে আসন পুনর্বিন্যাস (ডিলিমিটেশন) প্রক্রিয়ার পরে পুরনো সব কিছুই বদলে গিয়েছে। তা হলে কমিশন কী ভাবে ২০০২ সালের ভোটার তালিকাকে সূচক হিসাবে ধরছে? এই প্রক্রিয়াকে বেআইনি বলে দাবি করেছেন কল্যাণ। ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০০২ সালে। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০০৮ সালে। তার পর ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে নতুন বিন্যাসের ভিত্তিতে ভোট হয়। আগেকার বহু আসনের এখন অস্তিত্ব নেই। তৈরি হয়েছে নতুন আসন। নাম এক থাকলেও বিভিন্ন আসনে কোনও এলাকা যুক্ত হওয়া বা কোনও এলাকা বাদ যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ডিলিমিটেশনের মধ্যে দিয়ে। কল্যাণের প্রশ্ন, যার অস্তিত্বই নেই, তাকে কী ভাবে সূচক ধরছে কমিশন?
তৃণমূলের দ্বিতীয় প্রশ্ন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে যাঁরা ভোট দিলেন, তাঁদের নাম কী ভাবে কমিশন রাতারাতি বাদ দিয়ে দিতে পারে? কল্যাণের যুক্তি, নতুন করে নাম তোলানোর জন্যই এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করতে হচ্ছে। যাঁর নাম ছিল, তিনি কেন নতুন করে নাম তুলবেন? তার মানে কমিশন নাম বাদ দিয়েছে। কমিশন কি এ ভাবে নাম বাদ দিতে পারে?
তৃণমূলের পাশাপাশি তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে, কেরলের সিপিএম এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেস মামলা করেছে সুপ্রিম কোর্টে। মঙ্গলবার বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়।
ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন, ‘‘আমি মনে করি এসআইআর স্টে (স্থগিত) হওয়া উচিত।’’ প্রশ্ন হল, কমিশনের মতো সাংবাধিনিক প্রতিষ্ঠানের প্রক্রিয়া কি আদালত নির্দেশ দিয়ে স্থগিত করতে পারে? বুধবার কল্যাণ এ প্রসঙ্গে কোনও জবাব দেননি। তবে তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন, স্থগিতাদেশ না-দিলেও আদালতে সঠিক ভাবে যুক্তির জাল বুনতে পারলে এসআইআর প্রক্রিয়ায় নতুন কিছু সংযোজন এবং বিয়োজন হতে পারে।