Droupadi Murmu

‘দুর্ভাগ্যজনক’! রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যের নিন্দায় দল তৃণমূল

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে করা মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যকে মান্যতা দিল না তাঁর দল তৃণমূল। শনিবার সর্বভারতীয় তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি টুইট করে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২২ ১৫:১৬
Share:

রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অখিল গিরির মন্তব্যে সমর্থন নেই তৃণমূলের। ফাইল চিত্র।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে করা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যকে মান্যতা দিল না তাঁর দল তৃণমূল। শনিবার সর্বভারতীয় তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি টুইট করে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রপতি, শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমাদের পরম শ্রদ্ধা। আমাদের দলের বিধায়কের করা দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করি এবং স্পষ্ট করে জানাতে চাই যে অখিল গিরির মন্তব্যের আমরা তীব্র বিরোধিতা করি।’’ সঙ্গে আরও লেখা হয়েছে, ‘‘নারীর ক্ষমতায়নের যুগে এ ধরনের দুর্ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়।’’

Advertisement

শুক্রবার নন্দীগ্রামে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছ অখিলের বিরুদ্ধে।নন্দীগ্রামে অখিলের ওই সভার একটি ভিডিয়ো ফুটেজ সামনে এসেছে (আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি)। তাতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও সেখানে হাজির হয়েছেন। ওই সভায় অখিলকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?’’ বিতর্কের জেরে অখিল শনিবার দুঃখপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘এক মাস আগে থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন জায়গায় আমার সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন। আমি বয়স্ক মানুষ। আমার মনে ক্রোধ জন্মেছিল। রাষ্ট্রপতি মহোদায়াকে আমি কোনও অসম্মান করিনি। তাঁর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। যে কথা আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে, তা ক্রোধের বশে বেরিয়ে এসেছে। আমি অনুতপ্ত।’’

আর তার পরেই টুইট করে দলের অবস্থানও স্পষ্ট করে দেওয়া হল যে অখিলের মন্তব্যে সায় নেই তৃণমূলের। কারণ রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে করা অখিলের মন্তব্যকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে বিজেপি। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে আদিবাসী বিরোধী তকমা দিতে শুরু করেন বিজেপি নেতারা। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দলের সর্বভারতীয় আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় টুইটারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হন। সুকান্তের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ‘আদিবাসী বিরোধী’। মন্ত্রীর ওই বক্তৃতার ভিডিয়ো পোস্ট করে মালবীয় টুইটারে লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য অখিল গিরি বলছেন, ‘আমরা রূপের বিচার করি না। কিন্তু তোমাদের রাষ্ট্রপতি কেমন দেখতে? মুখ্যমন্ত্রী সব সময়ই জনজাতি বিরোধী। তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করেননি। এর পর এমন ঘটনা, লজ্জাজনক!”

Advertisement

বিরোধী দলনেতার বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামেই ওই মন্তব্য করে মন্ত্রী অখিল। তৃণমূলের টুইট করে অবস্থান জানানোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই টুইট করে শুভেন্দু দাবি করেন, ‘‘রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রধানের প্রতি ‘সংশোধন অযোগ্য’ বেলাগাম নিকৃষ্টমানের মন্তব্য করেন যিনি, উনিই আবার নাকি রাজ্যের সংশোধনাগার মন্ত্রী। লজ্জাজনক !’’ বাংলার রাজনৈতিক মহলের মতে, এ ভাবে অখিলকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করানোর জন্য চাপ তৈরি করার কৌশল নিতে পারে বিজেপি। তাঁর মন্তব্যকে সমর্থন না জানালেও, অখিলকে কোনও শাস্তির মুখে পড়তে হবে কি না, তা জানানো হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন