এক জনের স্মৃতিলোপের সমস্যা। অসাড় পা। অন্য জনের অগ্ন্যাশয়ের সমস্যা ছিলই, এখন অশক্ত হৃদযন্ত্রও।
আদালতের নির্দেশে দু’জনেই ভুবনেশ্বরে অ্যাপোলো হাসপাতালের চারতলায়। তাপস পাল রয়েছেন ৪৩৪ নম্বর ঘরে। আর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ৪০৩ নম্বরে। আজ মঙ্গলবার আবার আদালতে হাজির হওয়ার কথা তাঁদের। জেল সুপার রবীন্দ্রনাথ সোঁয়াই স্বীকার করছেন, ‘‘ওঁরা দিনে ২৭-২৮টি করে ওষুধ খান। জেল হাসপাতালে সেই চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।’’
রোজভ্যালি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথমে ঝাড়পড়া জেলে পাঠানো হয়েছিল সুদীপ-তাপসকে। রাখা হয়েছিল জেল হাসপাতালে। জেল সূত্রের খবর, জানুয়ারির মাঝামাঝি সুদীপবাবু গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ভুবনেশ্বর ক্যাপিট্যাল হাসপাতালে পাঠান। তার পর কটক এসভিসি হাসপাতালে ১৮ দিন আইসিসিইউ। ইতিমধ্যে সুদীপবাবুর পরিবার আদালতের কাছে তাঁকে পাকাপাকি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রাখার আর্জি জানায়। আদালত তা মঞ্জুর করলে ফ্রেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সুদীপবাবু অ্যাপোলোয় আছেন। পারিবারিক সূত্রে খবর, সুদীপবাবুর অবস্থা এখনও স্থিতিশীল নয়। স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় ভুবনেশ্বর থেকে বললেন, ‘‘অগ্ন্যাশয়ের সমস্যার সঙ্গে হৃদযন্ত্রের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে মানসিক ভাবে আমি খুবই বিপর্যস্ত।’’ সুদীপবাবুর খাওয়া-দাওয়াও খুব কমে গিয়েছে। মাঝেমধ্যেই জানতে চাইছেন, এ ভাবে আর কত দিন?
আরও পড়ুন: টাকায় টান, মুক্তি অধরা মনোরঞ্জনার
অ্যাপোলো-র তরফে অবশ্য সাংসদদের স্বাস্থ্য নিয়ে কিছু বলা হয়নি। মেডিক্যাল সুপার জ্যোতিপ্রকাশ বলেছেন, ‘‘বিচারাধীন বন্দির চিকিৎসা নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।’’ কিন্তু জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শারীরিক অবস্থা ভাল নয় তাপস পালেরও। দিন কুড়ি আগে জেল হাসপাতালে পড়ে গিয়েছিলেন। অজ্ঞান হয়েছিলেন প্রায় ১০ মিনিট। তখন তাঁকে সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে আদালতের নির্দেশে অ্যাপোলোতে। তাঁর স্ত্রী নন্দিনী পাল জানান, ‘‘বাঁ-পায়ে চোট পেয়েছেন। পা ফেলতে পারছেন না। সেই সঙ্গে স্মৃতিভ্রম আর মৃগী রোগ। জানি না এর শেষ কোথায়!’’ নন্দিনীদেবীও আপাতত ভুবনেশ্বরেই। তাঁর কথায়, ‘‘তাপস মাঝে মাঝেই বিড়বিড় করছেন আর বলছেন আমার অপরাধটা কোথায়?’’
দল অবশ্য নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। অন্তত নয়না, নন্দিনী তেমনই বললেন। কিন্তু দলের কাউকে তবে দেখা যাচ্ছে না কেন?
পরিবার সূত্রে খবর, প্রভাবশালী তকমা ঘোচাতেই হইচই করতে বারণ করেছেন আইনজীবীরা।