অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর রাখী মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
চোখ খুলে চিকিৎসকের হাত ধরে এক জন বলেছেন, ‘‘বেঁচে আছি!’’ অন্য জনের প্রশ্ন, তিনি ছেলেমেয়ের কাছে কবে ফিরে যেতে পারবেন?
হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের ২৪ ঘণ্টা পরে শহরের দু’টি হাসপাতালের দুই রোগী-রোগিণীই আপাতত সুস্থ। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট দুই হাসপাতালের কর্তারা জানান, ভেন্টিলেশন থেকে দু’জনকেই বার করা হয়েছে। তবে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটেই বিশেষ কাচঘরে রাখা হয়েছে তাঁদের। দু’জনেই কথা বলতে পারছেন। তবে পরিবারের সঙ্গে তাঁদের সরাসরি কথা বলিয়ে দেওয়া হয়নি। সম্ভাব্য সংক্রমণ এ়ড়াতেই বাড়তি নজরদারি চালিয়ে যেতে হচ্ছে। চিকিৎসক এবং হাসপাতালের কর্মী ছাড়া আপাতত অন্য কারও ওই দুই রোগী-রোগিণীর কাছে যাওয়ার অনুমতি নেই।
শনিবার রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়ার এক যুবকের ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণার পরে রবিবার তাঁর হৃৎপিণ্ড ব্যক্তিগত বিমানে কলকাতায় পৌঁছয়। সেই রাতেই আনন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শুরু হয় পূর্ব ভারতের দ্বিতীয় হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন। ফর্টিস হাসপাতালে সমীরণ দত্ত নামে সল্টলেকের এক বাসিন্দার শরীরে সেই হৃদ্যন্ত্র বসানো হয়।
সেই প্রতিস্থাপনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আরএন টেগোর হাসপাতালে শুরু হয় আরও একটি হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন। সেখানে রাখী মণ্ডল নামে হাওড়ার এক মহিলার শরীরে বসানো হয় পটনা থেকে আনা এক তরুণের হৃদ্যন্ত্র। এ দিন মুকুন্দপুরের ওই হাসপাতালের হৃৎশল্যচিকিৎসক মৃণালেন্দু দাস জানান, রাখী বছর দুয়েক ধরেই হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন। দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পরেই তাঁর হৃদ্যন্ত্রের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। ওষুধ এবং নজরদারি চালিয়েও তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ‘‘আরও অন্তত ১০ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পরে রোগিণীকে বাড়ি পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে,’’ বলেন মৃণালেন্দুবাবু।