মিড-ডে মিলের চাল রাখাকে কেন্দ্র করে শাসক-বিরোধী দুই পক্ষের গোলমালে উত্তপ্ত হয়ে উঠল চোপড়ার ঘিরনিগাঁও এলাকায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে চোপড়ার থানার ঘিরনিগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের দোলাবাড়ি এলাকাতে ঘটনাটি ঘটেছে। দুই পক্ষ একে অপরের উপর লোহার রড, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। গুলি চালানোর অভিযোগও তুলেছেন বিরোধীরাও। উভয় পক্ষের অন্তত ৩ জন জখম হয়েছেন। এক জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে চোপড়া থানার পুলিশ, ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ভারপ্রাপ্ত আইসি, এসডিপিও-সহ পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিক মণ্ডল বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’
তৃণমূলের দাবি, ওই এলাকাতে আইসিডিএস কেন্দ্রের চাল রাখার মতো ব্যবস্থা নেই। তাঁদের বক্তব্য, সে জন্য তাদের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আলিফের বাড়িতে চাল রাখার ব্যবস্থা রয়েছে অনেক দিন ধরেই। তৃণমূলের অভিযোগ, এদিন তাঁর বাড়িতে হামলা চালায় বিরোধী জোটের লোকজন। কোনও লিখিত অনুমতি ছাড়াই তাঁর বাড়ি থেকে চাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল তারা। বাধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়। জেলা তৃণমূলের সম্পাদক তথা চোপড়ার যুব নেতা জিয়াউল হক বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীর বাড়ি থেকে জোর করে চাল নিতে চেষ্টা করছিল। বাধা দিতে গেলে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে কংগ্রেস-বাম সমর্থকেরা।’’
কংগ্রেসের আনসারুল হক জানান, লালবাজার থেকে তাঁদের লোকজন ফিরছিলেন। সে সময় তৃণমূলের লোকজন আলিফের বাড়িতে বৈঠক করছিল। আনসারুল বলেন, ‘‘আমাদের লোকজন যাওয়ার সময় তাদের উপর ধারাল অস্ত্র নিয়ে, গুলি চালিয়ে হামলা করে। আমাদের জোট সমর্থক নজরুল আলমকে লোহার রড দিয়ে মারধর করেছে। তাঁর মাথার পাশ দিয়ে গুলি বেরিয়ে যায়। জখম অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোও করা হয়েছে।’’
এলাকার বিধায়ক হামিদুল রহমানের দাবি, ‘‘এলাকাতে কংগ্রেস-সিপিএমের নাম করে এলাকাতে তাণ্ডব চালাচ্ছে এক দল দুষ্কৃতী। পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছে।’’ বিরোধী কংগ্রেস, সিপিএমের দাবি, এলাকাতে গন্ডগোল করছে তৃণমূলই। কংগ্রেসের চোপড়া ব্লক সভাপতি অশোক রায় বলেন, ‘‘চাল রাখা নিয়েই গ্রামের মধ্যেই একটি গন্ডগোল হয়েছে বলেই শুনেছি।’’ তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত প্রধানের বাইকও এ দিন ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।