ইউজিসির চিঠির ভিত্তিতে তদন্তে নারাজ বিশ্বভারতী

নিয়োগে অনিয়ম, আপত্তিকর বদলি, বৈষম্য ও হয়রানি, প্রভৃতি নানা অভিযোগ বিষয়ে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) যে চিঠি দিয়েছিল, নির্দিষ্ট সময়ে তার জবাব পাঠাবে বিশ্বভারতী। তবে ওই সব অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে না। শুক্রবার বিশ্বভারতীর তরফে জানানো হয়, যে ছ’জন অভিযোগকারীর চিঠি ইউজিসি-র তরফে পাঠানো হয়েছে, তাদের কারও ক্ষেত্রেই কোনও অনিয়ম হয়নি। তাই তদন্ত শুরু করার প্রশ্নই ওঠে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৯
Share:

নিয়োগে অনিয়ম, আপত্তিকর বদলি, বৈষম্য ও হয়রানি, প্রভৃতি নানা অভিযোগ বিষয়ে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) যে চিঠি দিয়েছিল, নির্দিষ্ট সময়ে তার জবাব পাঠাবে বিশ্বভারতী। তবে ওই সব অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে না। শুক্রবার বিশ্বভারতীর তরফে জানানো হয়, যে ছ’জন অভিযোগকারীর চিঠি ইউজিসি-র তরফে পাঠানো হয়েছে, তাদের কারও ক্ষেত্রেই কোনও অনিয়ম হয়নি। তাই তদন্ত শুরু করার প্রশ্নই ওঠে না।

Advertisement

বিশ্বভারতীর তরফে প্রশাসনিক মুখপাত্র সন্দীপ বসু সর্বাধিকারী জানান, অধ্যাপক পদে প্রার্থী বাছাই করার প্রক্রিয়ার প্রতিটি স্তরেই নির্দিষ্ট আইন এবং বিধিনিয়ম পালন করা হয়েছে। ফলে অমনোনীত প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে নতুন করে তদন্তের প্রয়োজন দেখছে না বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

যাঁরা নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পরিচিত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মনোজ মুরলীও। তিনি ইউজিসি-র চেয়ারম্যানের কাছে সঙ্গীতভবনের অধ্যাপকের পদে ‘বেআইনি’ নিয়োগের তদন্তের আবেদন করে চিঠি দিয়েছিলেন। সন্দীপবাবুর বক্তব্য, “মনোজবাবু পড়াশোনা ও শিল্পে তাঁর পারদর্শিতা ও উৎকর্ষের জন্যই ইন্টারভিউয়ে ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু সিলেকশন কমিটির সাক্ষাৎকারে প্রার্থীরা যেমন দক্ষতা দেখিয়েছেন, তার ভিত্তিতেই শেষ সিদ্ধান্ত হয়েছে।” কোনও পক্ষপাতিত্ব হয়নি, তাই আলাদা করে তদন্তের কোনও সুযোগ নেই, এমনই দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

কিন্তু অভিযোগ তো সিলেকশন কমিটির নির্বাচনের ন্যায্যতা নিয়েই। কমিটির গঠন যথাযথ হলেও, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি নিয়ে প্রশ্ন উঠে থাকলে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা হবে না কেন? সন্দীপবাবু বলেন, “সিদ্ধান্ত হয়েছে সিলেকশন কমিটির সব সদস্যের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। এক বা একাধিক সদস্য অন্যদের থেকে ভিন্নমত জানিয়ে ‘নোট’ দিলে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ ছিল। এ ক্ষেত্রে তা ঘটেনি, তাই তার দরকার নেই।”

নিয়োগ-সংক্রান্ত অনিয়ম ছাড়াও লিঙ্গ বৈষম্য এবং হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন বিশ্বভারতীর এক মহিলা কর্মী। এ বিষয়ে সন্দীপবাবুর বক্তব্য, “এটা নিয়মমাফিক বদলি। ওই কর্মীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশাখা গাইডলাইন অনুসারে গঠিত হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু তিনি আসেননি।”

ইউজিসি-র পাঠানো চিঠিকে বস্তুত ‘রুটিনমাফিক’ চিঠি বলেই দেখছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। “ইউজিসি, কেন্দ্রীয় মানবোন্নয়ন মন্ত্রক বা রাষ্ট্রপতির কাছে অনেকে নানা অভিযোগ করে চিঠি পাঠান। সেই চিঠি ইউজিসি নিয়মমাফিক বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ফরওয়ার্ড’ (অগ্রসর) করে দেয়। আমাদের কোনও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে, এমন মনে করার কারণ নেই,” দাবি করেন সন্দীপবাবু।

এই কারণেই, ইউজিসি-র চিঠিতে অভিযোগকারীদের চিঠি দিয়ে বিশ্বভারতীর বক্তব্য জানানোর অনুরোধ থাকলেও, তাঁরা তা করবেন না। “ওই অভিযোগকারীরা আমাদের চিঠি লেখেননি, লিখেছেন ইউজিসি-কে। তাই কেবল ইউজিসি-র কাছেই চিঠি পাঠাবে বিশ্বভারতী,” বলেন সন্দীপবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন