সন্দীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তিনিই প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই আখতার আলির বিরুদ্ধে এ বার ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুললেন সন্দীপের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলার বিচার পর্বে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে সওয়াল-জবাবের সময় আখতারকে নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলা হয়। শুধু তা-ই নয়, আরজি করে আখতারের সময়কালে তাঁর ভূমিকাও প্রশ্নাধীন বলে দাবি করেন সন্দীপের আইনজীবী।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতারের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনার নামে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছিল আরজি করে। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ‘ঘনিষ্ঠ’দের টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে সিবিআই সন্দীপকে গ্রেফতার করে। গত বছর ২৯ নভেম্বর আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা করে সিবিআই। চার্জশিটে নাম রয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ-সহ পাঁচ জনের। সেই চার্জশিটের ভিত্তিতে বিচারপ্রক্রিয়া চলছে আলিপুর আদালতে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তিনি এই মামলার প্রথম সাক্ষী। জানা গিয়েছে, তিনিই সন্দীপদের বিরুদ্ধে টালা থানায় অভিযোগ করেছিলেন। মঙ্গলবার সিবিআইয়ের আইনজীবী প্রশ্ন করেন সেই সাক্ষীকে। তিনি জানান, তাঁদের অফিসে একটি অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতে গত বছর ১৯ অগস্ট টালা থানায় সন্দীপ এবং কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পাল্টা সওয়াল করতে উঠে আখতারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন সন্দীপের আইনজীবী। তাঁর দাবি, সন্দীপ আরজি করের সুপার হওয়ার আগে হাসপাতালের অধীনে থাকা হস্টেলে অবৈধ ভাবে জায়গা দখল করে ক্যান্টিন চলত (আনঅথরাইজড ভেন্ডর হস্টেল ক্যান্টিন)। আর এই ক্যান্টিন চলত আখতাতের সহায়তাতেই, অভিযোগ সন্দীপের আইনজীবীর। এই বিষয়ে সাক্ষীকে জিজ্ঞাসা করেন সঞ্জয়। কিন্তু সাক্ষী জানান, তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না।
তার পরেই সঞ্জয়ের সওয়াল, আখতারের সময় একাধিক বেআইনি কাজকর্মের জন্য বিভাগীয় তদন্ত হয়েছিল। সঞ্জয়ের এই দাবি কার্যত মেনে নেন ওই স্বাস্থ্যকর্তা। তিনি বলেন, ‘‘আমার যত দূর মনে পড়ছে হয়েছিল (বিভাগীয় তদন্ত)। গিয়েছিল ভিজিল্যান্স কমিশনও।’’
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রথম গ্রেফতার হয়েছিলেন সন্দীপ। টানা কয়েক দিন সিবিআই তাঁকে দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তার পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এই মামলার সূত্র ধরে আফসর আলি, বিপ্লব সিংহ এবং সুমন হাজরাকে গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এই মামলায় শেষ গ্রেফতার করা হয় আশিস পাণ্ডেকে।