BJP

BJP: লকডাউন পরিস্থিতির সঙ্গে বাধা লোকসভার বাদল অধিবেশন, আটকে পদ্মের আন্দোলন ভাবনা

বড় কর্মসূচি না নিয়ে জেলায় জেলায় সংগঠন মজবুত করার লক্ষ্য নিল বিজেপি। রাজ্য কার্যকারিণী বৈঠকের পরে দ্রুত জেলা কার্যকারিণীর বৈঠকে বসতে চায় দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২১ ১৫:৫৬
Share:

দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।

মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি-র কার্যকারিণী বৈঠকেই বাংলায় দলের পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক হওয়ার কথা। কলকাতায় লালবাজার অভিযান থেকে জেলায় জেলায় আন্দোলন কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। কিন্তু এখনই দিনক্ষণ ঘোষণা করা নিয়ে সমস্যায় গেরুয়াশিবির। তার একটি কারণ রাজ্যে ‘কার্যত লকডাউন’ পরিস্থিতি জারি থাকা। অপর কারণ লোকসভার বাদল অধিবেশন। যা শুরু হওয়ার কথা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই। মাস খানেক সময় রাজ্যের সাংসদদের দিল্লিতে থাকতে হবে অধিবেশনের জন্য। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মেদিনীপুরের সাংসদ হওয়ায় তিনিও ব্যস্ত থাকবেন সংসদে। ফলে জুলাইতেই আন্দোলন কর্মসূচি সফল করা যাবে কিনা তা নিয়ে দোটানায় পদ্মনেতৃত্ব।

Advertisement

ভোট-পরবর্তী গোলমাল নিয়ে বড় মাপের আন্দোলন কর্মসূচির কথা ভাবলেও তা আটকে গিয়েছে। বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার কিছুদিনের মধ্যেই ‘কার্যত লকডাউন’ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। এর পরে বিজেপি মনে করেছিল, জুনের শেষ দিকে অনেকটা শিথিল হয়ে যাবে বিধিনিষেধ। সেই হিসেব করেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিন ২৩ জুন থেকে তাঁর জন্মদিন ৬ জুলাই পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে গোটা রাজ্যে। এর আগে ২১ জুন যোগদিবসে বৃ‌ক্ষরোপণ এবং ১৯৭৫ সালে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার দিন ২৫ জুন ‘কালাদিবস’ পালনে জোর দেওয়া হবে রাজ্যে। কিন্তু কোনও কর্মসূচিই বড় আকারে করা সম্ভব হয়নি।

রাজ্য বিজেপি-র আশা ছিল, ১ জুলাই থেকে গণপরিবহণে পুরোপুরি ছাড় দেবে রাজ্য সরকার। সেটা মাথায় রেখেই জুলাইয়ের প্রথমার্ধে জাল ভ্যাকসিন-কাণ্ডের বিরোধিতায় কলকাতায় লালবাজার ঘেরাও কর্মসূচি নেওয়া হবে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে অন্তত ১৫ জুলাই পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলবে না। বাসেও যাত্রীসংখ্যায় নিয়ন্ত্রণ থাকছে। বড় জমায়েতেও অনুমতি নেই। ফলে সেই কর্মসূচির দিনক্ষণও চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না।

Advertisement

বিজেপি ঠিক করেছিল, মঙ্গলবারের কার্যকারিণী বৈঠকের পরেই ঘোষণা করে দেবে বড় কর্মসূচির দিনক্ষণ। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু গত শুক্রবারই বলেছিলেন, ‘‘সামনের মাসেই ১ লক্ষ কর্মী-সমর্থক নিয়ে লালবাজার ঘেরাও করব।’’ দু-একদিনের মধ্যেই বিক্ষোভের তারিখ জানিয়ে দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন সায়ন্তন। কিন্তু মঙ্গলবারের বৈঠকের পর সেই ঘোষণার সম্ভাবনা কম বলেই বিজেপি সূত্রে খবর।

ফাইল চিত্র।

বিজেপি মনে করছে, অগস্ট মাসের আগে বড় কর্মসূচি সম্ভব নয়। প্রথমত, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি কেমন থাকবে এবং বিধিনিষেধ কতদিন বহাল থাকবে তা অজানা। সেই সঙ্গে রাজ্য সভাপতি দিলীপ দীর্ঘসময় দিল্লিতে থাকলে কর্মসূচি সফল করা কঠিন। কারণ, বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় দলের যে বিপর্যস্ত চেহারা, তাতে দিলীপ-সহ রাজ্য নেতাদের জেলা সফর বাড়াতে না পারলে কর্মসূচি সফল করা কঠিন হতে পারে। আর জনসমাগম কম হলে কর্মসূচি ‘সফল’ হবে না। উল্টে খোঁচা খেতে হতে পারে।

তাই মঙ্গলবারের বৈঠকে বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে রাজ্য নেতৃত্বের জেলা সফরে। রাজ্য নেতাদের পাশাপাশি সাংসদরাও যাতে জেলায় জেলায় যান, তা দেখা হচ্ছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিধায়করাও এলাকাভিত্তিক সফর করবেন। আপাতত বড় কর্মসূচি না নিয়ে জেলায় জেলায় সংগঠনকে মজবুত করা হবে। রাজ্য কার্যকারিণী বৈঠকের পর খুব তাড়াতাড়িই গোটা রাজ্য জুড়ে জেলা কার্যকারিণীর বৈঠক হবে। সেখানে জেলা অনুযায়ী কর্মসূচি নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন