Mamata Banerjee

দাম বাড়ছে প্যারাসিটামলেরও, স্তম্ভিত মমতা! ৭৪৮টি ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে জেলায় জেলায় কর্মসূচি

নতুন অর্থবর্ষের প্রথম দিনেই ধাক্কা খেতে হয়েছে মধ্যবিত্তকে। ১ এপ্রিল থেকে দেশব্যাপী ৭৪৮টি ওষুধের মূল্যবৃদ্ধিতে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রের অধীনস্থ সংস্থা। ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:০১
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিমার উপর জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিও আবার নতুন করে তুলেছেন তিনি। বুধবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা জানিয়েছেন, আগামী ৪-৫ এপ্রিল বিকেল ৪টে থেকে ৫টা পর্যন্ত রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে এর বিরুদ্ধে তৃণমূলের তরফে সভা এবং মিছিল করা হবে। সাধারণ মানুষকেও নিজের নিজের মতো করে প্রতিবাদে শামিল হতে বলেছেন তৃণমূল নেত্রী। কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে জনতা রুখে না-দাঁড়ালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিপাকে পড়বে বলে আশঙ্কা মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর অভিযোগ, ক্যানসারের ওষুধের নামও বর্ধিত দামের ওই তালিকায় রয়েছে। তিনি বলেন, “যে ক্যানসার হ্যাজ় নো অ্যানসার, সেই ওষুধের দাম কেউ বাড়ায়!”

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী ৭৪৮টি ওষুধের দাম বৃদ্ধি হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রের অধীনস্থ সংস্থা ‘ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি’ বা এনপিপিআর। ওষুধের ‘এমআরপি’র (পাইকারি বিক্রয়মূল্য) উপরে ১.৭৪ শতাংশ হারে দাম বৃদ্ধিতে অনুমোদন দিয়েছে এনপিপিআর। এই তালিকায় রয়েছে কোলেস্টেরল, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ-সহ অন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র। এমনকি, জ্বরের ওষুধ প্যারাসিটামলও রয়েছে বর্ধিত মূল্যের ওষুধের তালিকায়। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, মানুষকে সুস্থ থাকার জন্য আর কত ‘দাম’ দিতে হবে, সেই প্রশ্ন তুলে আগামী শুক্র-শনি জেলায় জেলায় পথে নামবে তৃণমূল।

মমতা অভিযোগ করেন, কোনও ওষুধের দাম ৩১.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে তো কোনও ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১১৫.৮ শতাংশ। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে তিনি স্তম্ভিত! ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে দেশ তথা রাজ্যের সাধারণ, গরিব মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে ‘উদ্বিগ্ন’ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যাঁদের ক্ষমতা নেই বড় বড় হাসপাতালে গিয়ে প্রাইভেটে চিকিৎসা করানোর, যাঁদের ক্ষমতা নেই বিদেশ গিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করে চিকিৎসা করানোর, তাঁদের এই ওষুধগুলো কাজে লাগে।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘স্বাস্থ্যই সম্পদ’। ওষুধের দাম বৃদ্ধি হলে সাধারণ গরিব মানুষ কী ভাবে চিকিৎসা করাবে, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন মমতা। কারণ, চিকিৎসকেরা প্রেসক্রিপশনে ওই ওষুধগুলির নাম লিখে দিলে রোগীদের বেশি দামে সেগুলি কিনতে হবে। মমতা বলেন, “কাউকে ৯৭ শতাংশ, কাউকে ৫৭ শতাংশ, কাউকে ৪০ শতাংশ, কাউকে ৫০ শতাংশ বেশি দিতে হবে।” কোন শ্রেণির মানুষের কথা ভেবে এই মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও সংশয় মমতার। তাঁর সন্দেহ, সাধারণ মানুষের কথা ভেবে নয়, একটি ‘বিত্তবান’ শ্রেণির মানুষের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement