Aniket Chattopadhyay

মন্ত্রীর বৈঠকে তারকাদের ডেকে কাজ হাসিল করেছে বিজেপি: অনিকেত চট্টোপাধ্যায়

রাজ্যে পদ্ম ফুটলে টলিউডে বন্ধ হবে ‘মাফিয়া রাজ’? বিস্ফোরক ‘হবু চন্দ্র রাজা গবু চন্দ্র মন্ত্রী’র পরিচালক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:০৬
Share:

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়

নেট মাধ্যমে খুল্লামখুল্লা বিজেপি বিরোধিতা। মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের আমন্ত্রণী বৈঠকেও দেখা যায়নি অনিকেত চট্টোপাধ্যায়কে। রাজ্যে পদ্ম ফুটলে টলিউডে বন্ধ হবে ‘মাফিয়া রাজ’? বিস্ফোরক ‘হবু চন্দ্র রাজা গবু চন্দ্র মন্ত্রী’র পরিচালক।

প্রশ্ন: একুশের নির্বাচনের আগে বাংলার ‘ক্রিম’ তারকাদের নিয়ে জাভরেকরের সঙ্গে ‘হেভিওয়েট’ বৈঠক...

Advertisement

অনিকেত: ‘বিজেপি’র নজরে যাঁরা ‘ক্রিম’ তাঁদের ডেকেছে শিবির। এটা বাম আমল, তৃণমূলের সময়েও হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই শিল্পী-অভিনেতা-পরিচালকদের কিন্তু রাজনৈতিক জ্ঞানের ভাঁড়ার প্রায় শূন্য। ফলে, আমন্ত্রণ পেয়ে তাঁরা উপস্থিত হয়েছেন। আসলে কিন্তু উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়েছে বিজেপি-র। দল দেখাল, মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের আমন্ত্রণে টলিউডের তাবড় তারকা হাজির। যা এত দিন হয়নি। অর্থাৎ, বিজেপি-র জোর বাড়ছে। এটাই প্রমাণের তাগিদে গোটা পদক্ষেপ। তবে আমন্ত্রণে গেলেই সবাই দলে যোগ দেবেন, এমনটাও নয়। ব্যতিক্রমও আছে। আমার ধারণা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কেও ডাকা হয়েছিল। তিনি যাননি। কারণ, উনি বুঝেছেন নির্বাচনের আগে প্রকাশ জাভড়েকর বিনা উদ্দেশ্যে ডাকছেন না।

প্রশ্ন: আপনিও যাননি...

অনিকেত: আমি বাম রাজনীতি করে জেলে গিয়েছি। দলের হয়ে জেলায় জেলায় প্রচার করছি বিজেপিকে ভোট দেবেন না। কারণ, বাংলার পক্ষে বিজেপি ভয়ঙ্কর। এমন গোঁড়া বাম রাজনীতি সমর্থককে বিজেপিও ডাকবে না। ডাকলেও আমি যাব না।

প্রশ্ন: অথচ অনীক দত্ত গিয়েছেন...

Advertisement

অনিকেত: বিষয়টা আমাকেও অবাক করেছে। আমি খুব ভাল করে বুঝতে পেরেছি পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমন্ত্রণেও স্বচ্ছ্বতার অভাব। ঘোষণা ছাড়াই গোপন আমন্ত্রণ, বাড়ি গিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে আমন্ত্রণ, চা খাওয়ার ছবি টুইট করার পর সন্ধেবেলায় সবাই একজোট। তার পর দলীয় পতাকা একে অন্যকে ধরাচ্ছেন। এর পরেও অনীক দত্ত কেন আমন্ত্রণের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝতে পারলেন না বুঝলাম না। ওঁর মনে হয়েছে, এটা অ-রাজনৈতিক চা-চক্র তাই হয়তো গিয়েছেন। কী বলব?

প্রশ্ন: আসন্ন নির্বাচনের আগে তারকাদের রাজনৈতিক দলে যোগদান নিয়ে তো হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে...

অনিকেত: কারণ, দুটো জোরালো প্রতিপক্ষ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি তারকাদের লক্ষ্য, রাজনৈতিক দলকে ব্যবহার করে আখের গোছানো। ভোটের পালে হাওয়া টানতে রাজনৈতিক দলও তারকাদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। নইলে অক্লান্ত ভাষণ দেওয়া অরিন্দম শীল, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো পরিচালক বিজেপির মিটিংয়ে যোগ দেন? এঁরা দু’জনেই স্টার ক্যাম্পেনার ছিলেন শাসক দলের। সারা রাজ্যে ঘুরে তৃণমূলের হয়ে প্রচার করার জন্য বিশেষ সুবিধা পেতেন। এই অরিন্দম শীল আবার এক সময় বাম দলের হয়ে মিছিলে হেঁটেছেন। এখন তাঁদের দাবি, তাঁরা নাকি রাজনীতি করেন না। শুধু সিনেমাই বোঝেন! রুদ্রনীল মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মা’ সম্বোধন করতেন। এখন তাঁর চোখে তিনি ‘ডাইনি’। আবার সায়নী ঘোষ ঘোর বিরোধীপক্ষ থেকে সটান মা-মাটি-মানুষের দলে। যশ দাশগুপ্তের ছবি দেখলাম সম্প্রতি। মুখে কোনও অভিব্যক্তিই নেই। তিনি বিজেপিতে। দল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে একটারও উত্তর দিতে পারবেন? যশের হয়তো বিজেপি যোগে লাভ হতে পারে। বিজেপির কি আদৌ কিছু হবে? (হাসি)

প্রশ্ন: অতিমারির দাপটে স্তব্ধ হতে বসেছে টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রি। সেই নিয়ে কোনও আলোচনা নেই!

অনিকেত: আমারও প্রশ্ন সেখানেই। এনএফডিসি গত ১০ বছর কেন গত ২০ বছরেও একবারও উঁকি দেয়নি টলিউডে। যখন এল তখনও তারা শিল্পীদের খোঁজ নিল না। সত্যজিৎ রায়ের নামে পুরস্কার দেওয়া নিয়ে মিটিং ডাকল। এর থেকেই বোঝা যায় পুরোটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

প্রশ্ন: নির্বাচন সত্যিই বদল আনলে টলিউড ‘মাফিয়া রাজ’ মুক্ত হবে?

অনিকেত: ২০০৬-০৭ সালে টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে শেষ কথা বলতেন বাম দলের এক নেতা। তিনি বললে শ্যুটিং হত, নিষেধ করলে বন্ধ হয়ে যেত। ২০১১-তে সেই জায়গায় এলেন অন্য দলের এক নেতা। ফলাফল একই। আগের বাম নেতা এখন বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। ২০২১-এ বদল এলে আবার ‘পার্থ-রাজ’ চলবে। (হাসি)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন