স্বাস্থ্য দফতরই ‘প্যাডম্যান’, ৬ টাকায় ন্যাপকিন

একটি ন্যাপকিনের দাম এক টাকা। বিশেষ করে কিশোরীদের মধ্যে যাতে ন্যাপকিন ব্যবহার ও ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে ওঠে তার জন্যই তারা এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে বলে জানিয়েছে।

Advertisement

শুভাশিস সৈয়দ

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৭
Share:

বিলি: জলঙ্গিতে দেওয়া হচ্ছে ন্যাপকিন। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যের ৮টি জেলায় ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই সস্তায় স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রি শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। একটি ন্যাপকিনের দাম এক টাকা। বিশেষ করে কিশোরীদের মধ্যে যাতে ন্যাপকিন ব্যবহার ও ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে ওঠে তার জন্যই তারা এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে বলে জানিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, এর ফলে কিশোরীদের সার্বিক স্বাস্থ্য ভাল হবে, পরবর্তীকালে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় মা ও শিশুর শারীরিক অবস্থার উপরও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

Advertisement

পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা, ডায়মন্ডহারবার স্বাস্থ্য জেলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও কোচবিহারে এই ন্যাপকিন বিক্রি শুরু হয়েছে। কিছুদিনের ভিতর গোটা রাজ্যে তা চালু হবে। দরপত্র ডেকে একটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে প্রতি প্যাকেট ১১ টাকায় সরকার ন্যাপকিন কিনছে। তা বিক্রি করা হচ্ছে ৬ টাকায়। একটি প্যাকেটে রয়েছে ৬টি ন্যাপকিন। বাড়ি-বাড়ি এই ন্যাপকিন বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আশা কর্মীদের। ৬ টাকার মধ্যে ১ টাকা পাবেন আশা কর্মী। বাকি ৫ টাকা সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতিতে জমা হবে। সেই সঙ্গে প্রতি মাসে একটি ন্যাপকিনের প্যাকেট প্রতি আশা কর্মী নিখরচায় পাবেন।

গ্রামের গরিব মহিলারা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের ‘বিলাসিতা’ দেখাতে পারেন না। ঋতুকালীন সময় কাপড়ের টুকরোই তাঁদের সম্বল। সেটাই বার বার ধুয়ে ব্যবহার করা। তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও থাকে। এই সমস্যা ভাবিয়েছিল অরুণাচলম মুরুগানন্থম-কে। আত্মীয়-পরিজনের ছিছিক্কার, সামাজিক কুৎসার পরোয়া না করে বহু চেষ্টায় তৈরি করে ফেলেছিলেন সস্তায় স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির যন্ত্র। তাঁর জীবনের উপর ভিত্তি করে বানানো ‘প্যাডমান’ এখন মাতাচ্ছে গোটা বিশ্ব। প্রশংসা করেছে খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

Advertisement

হয়তো আশ্চর্য সমাপতন, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতর ঠিক এই সময়েই ‘প্যাডম্যান’-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ! অন্যতম পিছিয়ে পরা জেলা মুর্শিদাবাদে আপাতত ২৬টি ব্লকের জন্য আড়াই লক্ষ স্যানিটারি ন্যাপকিন পাঠানো হয়েছে। সেখানকার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস জানান, প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলাদের ন্যাপকিন ব্যবহারের অভ্যাস নেই। বাজারে যে ন্যাপকিন পাওয়া যায়, তার দামও তাঁদের নাগালের বাইরে। এখন স্বাস্থ্য দফতর সস্তায় ন্যাপকিন দেওয়ায় আশা করা যাচ্ছে মহিলারা তা ব্যবহার করবেন এবং তাঁদের সংক্রমণের হার অনেক কমে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন