West Bengal Lockdown

মুম্বইয়ে হৃদরোগে মৃত্যু হল শ্রমিকের

গত সপ্তাহে পঞ্জাবে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরেরই এক শ্রমিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২৪
Share:

শোকার্ত: কালীগঞ্জের বাড়িতে সুলতানের বাবা-মা। নিজস্ব চিত্র

লকডাউনে ভিন্ রাজ্যে আটকে থাকা এক শ্রমিকের মৃত্যু হল। মুম্বইয়ে মৃত ওই শ্রমিকের বাড়ি মালদহের চাঁচলের কালীগঞ্জে। লকডাউনের জেরে তাঁর দেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা যায়নি। মুম্বইয়েই শেষকৃত্য করা হয়েছে। তার জেরে ছেলেকে শেষ বারের মতো দেখতে পারলেন না বৃদ্ধ বাবা-মা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর নাম সুলতান আলি (৩৮)। অসুস্থ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

গত সপ্তাহে পঞ্জাবে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরেরই এক শ্রমিক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কালীগঞ্জের বাসিন্দা সুলতান দীর্ঘদিন ধরেই মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় থাকেন। স্ত্রী ও তিন মেয়েকেও সেখানে নিয়ে যান। সেখানে যান তাঁর দুই ভাইও। সকলেই পোশাক তৈরির কারখানায় সেলাইয়ের কাজ করতেন। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা আব্বাস আলি ও মা শরিফা বিবি। সংসার চালাতে তাঁদের ভরসা ছেলের পাঠানো টাকাই। সম্প্রতি হৃদরোগের সমস্যা দেখা দেয় সুলতানের। চিকিৎসাও চলছিল। লকডাউন উঠলেই বাড়ি ফিরবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু কয়েক দিন আগে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রবিবার সকালে তাঁকে মুম্বইয়ের একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন দুপুরেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

পারিবারিক সূত্রে খবর, লকডাউনের জেরে সুলতানের দুই ভাইয়েরও কাজ নেই। যেটুকু জমানো ছিল ফুরিয়েছে। ফলে সুলতানের দেহ বাড়ি ফেরানোর টাকা তাঁদের ছিল না। তাই মুম্বইয়েই তাঁর শেষকৃত্য করা হয়।

সুলতানের ভাই শরিফ আলি সোমবার ফোনে বলেন, ‘‘কোনও রকমে আমাদের দিন কাটছে। ঠিকমতো খাবারও জুটছে না। এর মধ্যে দাদার দেহ নিয়ে ফেরার সামর্থ্য ছিল না।’’

মা শরিফা বিবি বলেন, ‘‘ট্রেন চালু হলেই ছেলেটা বাড়ি ফিরবে বলেছিল। ওকে শেষ দেখাটুকুও আর হল না।’’

চাঁচল-১ ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য ওই পরিবারটিকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, পঞ্চায়েতকে বিষয়টি দেখার কথা বলা হয়েছে। ওই বৃদ্ধ দম্পতি ভাতা-সহ সরকারি অন্য প্রকল্পের সুবিধা যাতে পান, তা-ও প্রশাসনের তরফে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন