বাবার সঙ্গে সঞ্জয়। বীজপুর থানায়। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
স্মৃতির অতলে হারিয়ে গিয়েছে পনেরোটি বসন্ত। বাড়ির ঠিকানা, বাবা-মায়ের নাম— কিছুই মনে নেই। কিন্তু কাজের সূত্রে ঘুরে ফিরে আসতে হত নিজের এলাকাতেই। সেই চেনা পথ-ঘাটই ধীরে ধীরে ফেরাল স্মৃতি। অবশেষে ঘরের ছেলে ঘরেই ফিরেছে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে বেড়াতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় সঞ্জয় বসু। পনেরো বছর পরে তিনি এখন একত্রিশের যুবক। জানালেন, মাধ্যমিকের পরে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন ঈশ্বরগুপ্ত সেতুতে। একটি মোটর ভ্যান ধাক্কা মারে। তার পর আর কিছু মনে পড়ে না।
জ্ঞান এল যখন, সঞ্জয়ের তখন ঠাঁই মিলেছে নদিয়ার তাহেরপুরে। বাড়ির লোকজনকে নিজের নামটুকু বলতে পেরেছিলেন সঞ্জয়। বাড়িতে খাটাল আছে। সেখানে কাজও মিলে যায়। বেশ কয়েক বছর পরে অন্য একটি খাটালে কাজের সূত্রে সঞ্জয়কে প্রায়ই আসতে হত হালিশহরে সরকার বাজারে একটি মিষ্টির দোকানে। ছানা বিক্রির কাজে। হালিশহরের খাসবাতি এলাকাতেই পুরনো বাড়ি সঞ্জয়ের। সে কথা মনে করতে না পারলেও পথঘাট চেনা চেনা ঠেকত। মিষ্টির দোকানের মালিককে সে কথা জানিয়েছিলেন। কথাটা লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। জানতে পারেন বাবা সাধন বসুও। দূর থেকে দেখে ছেলেকে চিনতে পারেন তিনি। কিন্তু বাবাকে নিয়ে স্মৃতি নেই সঞ্জয়ের। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে যখন কথা হচ্ছে বাবা-ছেলের, তখন বীজপুর থানার পুলিশ ছিল রাস্তায়। তাঁরা এসে সঞ্জয়কে সাধনবাবুর সঙ্গে নিয়ে যান পুরনো বাড়িতে।
একের পর এক ভেসে উঠতে থাকে স্মৃতি। বীজপুর থানার পুলিশ খুঁজে বের করেছে পুরনো মিসিং ডায়েরি। থানার এক আধিকারিক বলেন, “বিশ বছর পুলিশে আছি। এ ভাবে কেস বন্ধ হতে কখনও দেখিনি!”