বেশি চাল মিলছে ঠিকই। কিন্তু বড় হাঁড়ি কই? বাড়তি জ্বালানি খরচই বা আসবে কোথা থেকে?
সঙ্কটে রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। ১ এপ্রিল থেকে রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে শিশু এবং প্রসূতিদের মাথাপিছু চালের বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু বড় হাঁড়ি বা বাড়তি জ্বালানি খরচ বরাদ্দ হয়নি। এই ক’দিনেই ছাত্রছাত্রী এবং প্রসূতিদের মুখে বাড়তি চালের ভাত তুলে দিতে হিমসিম খাচ্ছেন ওই কেন্দ্রগুলির কর্মী-সহায়িকারা। জ্বালানি কিনতে নিজেদের বেতনের টাকাতেও হাত পড়ছে বলে তাঁদের দাবি। ইতিমধ্যে হাওড়া জেলার কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এ জন্য তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
সমস্যাটি মেনে নিয়ে রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘প্রসূতি এবং শিশুদের জন্য নতুন খাদ্য তালিকা তৈরি হয়েছে। চালের বরাদ্দ বেড়েছে। ফলে, আনুষঙ্গিক কিছু সমস্যাও তৈরি হয়েছে। জেলা প্রকল্প আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা করা হবে।’’
রাজ্যে ১ লক্ষ ১৬ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। আগে প্রত্যেক ছাত্রের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০ গ্রাম চাল। প্রসূতিদের মাথাপিছু ৮০ গ্রাম করে। ১ এপ্রিল থেকে সেই বরাদ্দ বেড়ে ছাত্রপিছু হয়েছে ৮০ গ্রাম চাল। প্রসূতিদের মাথাপিছু ১৪০ গ্রাম করে। বেড়েছে ডিম, সয়াবিন, আনাজের বরাদ্দও। কিন্তু অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী-সহায়িকারা আতান্তরে পড়েছেন বাড়তি চাল নিয়ে। তাঁরা জানান, আগে যে পরিমাণ চাল রান্না করতে হত, তাতে ছোট হাঁড়িতেই কাজ হয়ে যেত। এখন বড় হাঁড়ির প্রয়োজন। তা দেওয়া হয়নি। একই সমস্যা জ্বালানির ক্ষেত্রেও। আগে ৫০ জন ছাত্রের জন্য জ্বালানির দাম দেওয়া হতো ১৯ টাকা। ৭০ জন পর্যন্ত ছাত্রের জন্য জ্বালানি খরচ দেওয়া হতো ২১ টাকা। ১০০ জন ছাত্রের জন্য ২৩ টাকা। কিন্তু চালের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হলেও জ্বালানির টাকা একই রাখা হয়েছে।
ওই কর্মী-সহায়িকাদের প্রশ্ন, কী ভাবে এত চাল রান্না হবে? জগৎবল্লভপুরের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এক কর্মী জানান, বড় হাঁড়ি না-থাকায় তিনি একই হাঁড়িতে দু’বার চাল ফুটিয়ে নিচ্ছেন। এতে জ্বালানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে। সময়ও বেশি লাগছে। ওই কর্মীর কথায়, ‘‘বাড়তি জ্বালানি খরচ আমার পকেট থেকে যাচ্ছে।’’ উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এক কর্মী জানান, তিনি বাড়তি চাল ছাত্র এবং প্রসূতিদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ভাবছেন। বড় হাঁড়ি ও বাড়তি জ্বালানি খরচের দাবিতে জগৎবল্লভপুরে ব্লক শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিকের কাছে সম্প্রতি বিক্ষোভ দেখান এলাকার ২৫০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকারা। একই দাবিতে উলুবেড়িয়া-২ ব্লকেও বিক্ষোভ হয়।